জগন্নাথপুরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই কাটা হল শতভাগ ধান

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার আগেভাগেই হাওরের বোরো ফসল কাটা শেষ হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি কার্যালয়।

ধান মাড়াই ও শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে এখন ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা। এবারের বোরোর বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে হাওরবাসীর মুখে।

শুক্রবার সরেজমিনে জগন্নাথপুরের বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওরের পাকা ধান কাটা শেষ হয়েছে। এসব পাকা ধান গোলায় তুলতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন কৃষক পরিবার। এ ছাড়া উপজেলার মইয়ার হাওর, পিংলার হাওরসহ ছোট বড় ১৫টি হাওরের সোনারাঙা ধান কাটা শেষ।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই ধান কাটা শেষ হয়েছে। প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় ভালোয় ভালোয় ধান কাটার কাজ শেষ হয়। এ উপজেলায় সাধারণত চৈত্রের শেষের দিকে বোরো ধান পাকা শুরু হয়। পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে ধান কাটার ধুম পড়ে। জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত সময় লাগে ফসল গোলায় তুলতে। অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর বৈশাখ মাসেই ধান গোলায় তুলার কাজ শেষ হয়ে যাবে।

তারা আরও জানান, বোরো ধান ঘরে তুলতে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে ফসলের মাঠে মাঠে ঘুরছেন হাওরপাড়ের কৃষক পরিবারের সদস্যরা। এবারের বাম্পারে ফলনে কৃষকেরা আনন্দিত। তবে শ্রমিক সংকটের দুশ্চিন্তায় থাকলেও কম্বাইন হারভেস্টর ধান কাটার যন্ত্রের সুবিধায় এবং প্রকৃতির আশীর্বাদে ফসলের মাঠ থেকে ধান কাটার কাজ শেষ হয়েছে।

কৃষক মোহন মিয়া বলেন, ‘এবারই আগেভাগে ধান কাটা শেষ হয়েছে। ৬০ কেদার জমিতে ধান চাষ করি। সব জমির ধান কাটা শেষ। এক দুই দিনের মধ্যে গোলায় তুলার কাজও শেষ হয়ে যাবে। অন্যান্য বছর বোরো ফসল গোলায় তুলতে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত সময় লাগত। এ বছরই বৈশাখেই শেষ হবে।

ধান মাড়াই ও ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটি’র সদস্য আলী আহমদ বলেন, ‘প্রকৃতির কৃপায় এবার ভালোয় ভালোয় ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকেরা গোলায় ধান তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর ফসল ভালো হওয়ায় হাওরবাসী খুশি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার ধান কাটার মধ্য দিয়ে এ উপজেলার সবক’টি হাওরের শতভাগ ধান কর্তন শেষ হয়েছে। তবে হাওরের বাইরে কিছু উঁচু জমিতে এখনো ধান কাটা চলছে। দুই তিন দিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে। প্রায় ১৪ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২৮ হাজার ১২০ মেট্রিকটন। আশা করছি এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।বোরো