জগন্নাথপুরে প্রবাসীর বিরুদ্ধে শ্মশান দখলের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে প্রবাসী মুহিত মিয়াসহ দুজনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের শ্মশানঘাট দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গোরারগাঁও গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ৫০ জনের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ইংল্যান্ড প্রবাসী মুহিত মিয়া কলকলিয়া ইউনিয়নের বড় মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত সমসু মিয়ার ছেলে ও অপর অভিযুক্ত গোরারগাঁও গ্রামের মৃত মনাই উল্লার ছেলে লাল মিয়া।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গোরারগাঁও মৌজার জে এল নম্বর-২৩, খতিয়ান ১-এর ১৬ শতক শ্মশান রকম ভূমি মুহিত মিয়া অভিযুক্ত লাল মিয়ার কাছ থেকে কিনেছেন দাবি করে জোরপূর্বক দখল করেন। এর পর থেকে মুহিত মিয়ার লোকজনের বাধায় ওই শ্মশানঘাট শবদাহের কাজ বন্ধ রয়েছে। মরদেহ নিয়ে গেলে ফিরে আসতে হয় সংখ্যালঘুদের।

গোরারগাঁও গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক করুনা সিন্ধু দাশ বলেন, ‘বংশ পরম-পরায় থেকে ওই শ্মশানঘাটে আমাদের পূর্বপুরুষেরা শবদাহে কাজ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী মুহিত মিয়া আমাদের শ্মশানঘাট বেদখলের পাঁয়তারা শুরু করেন। এ নিয়ে এলাকার লোকজন সালিস বৈঠকে আয়োজন করলে মুহিত মিয়া দলিল বা ওই জায়গার কাগজপত্র নিয়ে আসেন না। বর্তমানে ও শ্মশানঘাট মুহিত মিয়া জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন।’

ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা রজন বৈদ্য বলেন, ‘আমরা সংখ্যালঘু পরিবার থাকায় ওই ইংল্যান্ড প্রবাসী আমাদের শ্মশানঘাট অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন। এখন আর ওই শ্মশানে শবদাহ করতে দেওয়া হয় না। আমাদের শ্মশানঘাট দখল মুক্ত হওয়া জরুরি। এ শ্মশানঘাট ছাড়া আমাদের আর শবদাহের কোনো জায়গা নেই।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুহিত মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান ভূমি দখল করিনি। আমি গোরারগাঁও গ্রামের লাল মিয়ার কাছ থেকে ৮-১০ বছর আগে এ জায়গাটি কিনেছি।’

অপর অভিযুক্ত লাল মিয়া বলেন, ‘আমি পতিত জায়গা বিক্রি করেছি। হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান ভূমি বিক্রি করিনি। বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করে শ্মশান ভূমি আলাদা করে দিতে চেষ্টা করছি।’

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’