সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ইসমাইল চক গ্রামের মৃত ইয়াজ উল্যার ছেলে লন্ডন প্রবাসী মো. কমর উদ্দিনের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী। তারা ওই জমিতে দেয়াল নির্মাণেও বাধা দিচ্ছে কমর উদ্দিনের লোকজনকে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে প্রবাসী কমর উদ্দিনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তার নিকটাত্মীয় মো. বাবুল মিয়া।
বাবুল মিয়া সংবাদ সম্মেলনে জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া ইউনিয়নের ইসমাইল চক গ্রামের ওয়াজিদ উল্লার ছেলে তাহার মিয়া ওরফে তেরা মিয়া ও তার ছোট ভাই সুজন মিয়া এলাকায় ভূমিখেকো হিসেবে পরিচিত। একই গ্রামের প্রবাসী কমর উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে পবিবার পরিজন নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন। সেই সুযোগে ভূমিখেকোচক্রের তাহার মিয়া ওরফে তেরা মিয়া ও তার লোকজন কমর উদ্দিনের জায়গা জাল দলিল ও নামজারির মাধ্যমে তাদের নামে রেকর্ড করে নেয়। জমির খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে বিষয়টি তিনি জানেন। পরে দলিলের নকল তুলে জানা যায় তাদের করা দলিল (দলিল নং- ৪৯৮/২০০৪) জাল। জমির দাগ, খতিয়ান এবং মৌজার সাথে দলিলের কোন মিল নেই। এ ব্যাপারে পরে কমর উদ্দিনের পক্ষে জগন্নাথপুরের সহকারি কমিশনার বরাবরে নামজারি রিভিউয়ের জন্য মোকদ্দোমা (নং-১০১/২০২৩-২৪) দাখিল করা হয়।
বাবুল মিয়া জানান, তেরা মিয়া তার দলিলে উল্লেখ করেন জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গড়গড়িয়া গ্রামের আব্দুর নুরের নামে ওই জমির দলিল রয়েছে। কিন্তু তা সত্য নয়। ওই জায়গা উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের ১৮৬ নং জেলস্থীত প্রাণদেব কাপন মৌজায়। তেরা মিয়ার উল্লেখিত দলিলের সাথে ওই জায়গার কোন মিল নেই। অথচ এই ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে তেরা মিয়ার নামে জমি নামজারি করে নেওয়া হয়।
বাবুল মিয়া জানান, কমর উদ্দিন ওই জায়গার খরিদা সূত্রে মালিক। দীর্ঘদিন ধরে কমর উদ্দিন ও তার স্বজনরা ওই জমি ভোগ দখল করে আসছেন। একই সাথে যথাযথ নিয়মে জমির খাজনাও প্রদান করছেন। ভূমিখেকো তেরা মিয়া ওই জমির জাল দলিল করার বিষয়টি জানার পর সহকারী কমিশনার বরাবর রিভিউ পিটিশন দিয়ে নামজারি ভাঙার আবেদন করা হয়। এরপর সহকারি কমিশনার বাদী ও বিবাদীকে শুনানির জন্য নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু বিবাদী পক্ষ পর পর ৩টি নোটিশের পর আদালতে হাজির হয়নি। পরবর্তীতে সহকারি কমিশনার দলিল যাচাই-বাচাই করে দেখেন তেরা মিয়ার দলিলটি জাল।
এ অবস্থায় নামজারি জমাভাগের আবেদন নামঞ্জুর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। একই সাথে ওই মৌজায় ৩ একর ১৯ শতক জমি ১১ নম্বর খতিয়ানে পুনর্বহাল করার আদেশ প্রদান করা হয়।
বাবুল মিয়া জানান, এরপরও থামেনি তেরা মিয়া ও তার চক্রের লোকজন। তারা ওই জায়গায় দেওয়াল নির্মাণে বাঁধা প্রদান করছে। এমনকি বিভিন্ন হুমকিও প্রদান করছে।
এ অবস্থায় নিরাপত্তার জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতা চান প্রবাসী কমর উদ্দিনের স্বজনরা।