জগন্নাথপুরে নদীভাঙনে বিলীন রাস্তা, ঝুঁকিতে বসতঘর

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বালিশ্রী গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি। এখন ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক বসতঘর। ভাঙন আতঙ্কে কাটছে গ্রামবাসীর দিন-রাত।

জানা যায়, দুই দশকেরও আগে থেকে কুশিয়ারা নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। বারবার রাস্তার স্থান পরিবর্তন করলেও ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবছর গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি নদীগর্ভে চলে যায়। অব্যাহত ভাঙনে গতবছর চারটি বসতঘরও চলে যায় নদীগর্ভে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় গ্রামের দুই শতাধিক নারকেল, সুপারিসহ বিভিন্ন গাছ হারিয়ে গেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ায় লোকজন চলাচল করছেন নদীর পাড় ধরে। কিছু স্থানে বাড়িঘরের উঠানের উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এবার বর্ষার শুরুতেই ভাঙন শুরু হওয়ায় ১০ থেকে ১৫টি বাড়িঘরের উঠান ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘর চলে যেতে পারে নদীগর্ভে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মিলিয়ে অন্তত ১০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন তারা। বাজারে মালামাল নিয়ে যাতায়াত করতে বেশি সমস্যা হচ্ছে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণের।

বালিশ্রী গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, প্রতিবছর নদীভাঙনে নদীর পাড়ের লোকজন আতঙ্কে থাকেন। ইতোমধ্যে অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। যেভাবে ভাঙন চলছে, তা দ্রুত রোধ করা না হলে গ্রামের আরও অনেক বাড়িঘর নদীর গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসাইন বলেন, আমরা নদীভাঙন এলাকায় গিয়ে পরির্দশন করে এসেছি। নদীভাঙন রোধে কাজ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলে আসছি। আমাদের উপরের মহলকে জানিয়েছি। আশা করি তারা এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করবেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মো. ছদরুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার ইউপি সদস্য বালিশ্রী গ্রামের নদীভাঙনের স্থান দেখে এসেছি। আমার ইউনিয়নের ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। আমি পরিকল্পনামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবো। আশা করি ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজিদুর রহমান বলেন, নদীভাঙনে রাস্তা বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে শুনেছি। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের বলেছি। বিকল্প রাস্তার কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।