জকিগঞ্জে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে হয়রানীর শেষ নেই

সরকার অনলাইনে খাজনা পরিশোধ চালু করায় ঘুষ, দুর্নীতি অনিয়ম দুর হওয়ার কথা থাকলেও জকিগঞ্জে ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছেন। খাজনা দিতে আসা লোকজনের যেন হয়রানীর অন্তঃ নাই।

জানা গেছে, বিক্রির জন্য খাজনা দিতে আসলে এ টাকার অংক আরোও বেড়ে যায়। খাজনার অংকের ১০/২০ গুন বেশী তো দিতে হচ্ছেই, পাশাপাশি পোহাতে হচ্ছে নানা ঝক্কিঝামেলা।

হয়রানীর অনুসন্ধানে দেখা যায়, জকিগঞ্জের ইছাপুুর মৌজায় ৩৬৮ খতিয়ানের ৪৮৯১ এক বিধবা মহিলার একুশ শতক জায়গা বারঠাকুরী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল গণির নামে বিএস জরিপে রেকর্ড হয়ে যায়। ঐ জায়গাটি বিধবা মহিলা বিক্রি করতে চাইলে মৃত আব্দুল গণির ছেলে মো. আবিদ উদ্দিন বুধবার খাজনা দিতে আসেন। খাজনার জন্য তার নিকট থেকে ২৫০০ টাকা রাখলেও তাকে ১৩১ টাকা পরিশোধের একটি দাখিলা ধরিয়ে দেয়া হয়।

নিজের জায়গার খাজনা পরিশোধের জন্য আইডি দিয়ে অনলাইন নিবন্ধন করে অনুমোদন নেয়ার জন্য জকিগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান বিলেরবন্দ গ্রামের প্রবাসী কামরুজ্জামান সোহেল। কাল আসেন, পরশু আসেন বলে এক সপ্তাহ ঘুরিয়ে ভূমি অফিসের লোকজন একটি দোকানের নাম ধরে বলে ঐখানে নিবন্ধন করলেন না কেন; এই বলে বরতসনা ভর্ৎসনা করেন জকিগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন। ভূমি অফিসের আইডিতে থাকা স্বত্বেও তাকে বারবার নানা অযুহাতে ঘুরাতে থাকেন।

আলম নগর গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, খাজনা পরিশোধের জন্য নিবন্ধন করে যোগাযোগ না করলে ভূমি অফিসের লোকজন তা অনুমোদন করে দেয় না। যোগাযোগ করলে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ থেকে খাজনা বকেয়া ধরে দেয়, আর তাদের উৎকোচ দিলে ২/৩ বছরের বকেয়া দেখানো হয়। ভূমি উন্নয়ন কর দাখিলা দেখাতে পারলে শুধু বকেয়া কমানো হয়। অথচ এসএস খতিয়ানে খাজনা পরিশোধের রেকর্ড থাকলেও ভূমি অফিসের লোকজন সাধারণ জনগণের ঘাড়েই সকল দায় চাপিয়ে দেয়।

এছাড়া নামজারীতেও রয়েছে তুঘলকী কারবার, এখানেও হয়রানীর পাশাপাশি বিপুল অংকের টাকা গুনতে হয় ক্রেতাদের।

এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ ভূমি অফিসের ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সৈকত চক্রবর্তী বলেন, নামজারী মামলা নিয়ে আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। অফিসের কোন কর্মচারী অতিরিক্ত টাকা নিতে পারে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।

জকিগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভূমি অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। একটি চক্র নামজারীসহ সর্বক্ষেত্রে অনিয়ম করে যাচ্ছে বলে আমি শুনেছি, কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’