সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে যাওয়ার কারণে সময় সময় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যেই উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, জকিগঞ্জ-শেওলা সড়ক, জকিগঞ্জ-সিলেট সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (৩১ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত জকিগঞ্জ পৌরসভার একটি অংশ সহ উপজেলার প্রায় ৮ টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশী প্লাবিত হয়েছে জকিগঞ্জ, খলাছড়া, বিরশ্রী ও কাজলসার এলাকার বিস্তির্ণ এলাকা। এতে প্রায় দেড় লক্ষাধিক লোকজন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন।
এ অবস্থায় উপজেলায় ৫৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক পারিবার ঠাঁই নিয়েছেন। নদীতে পানি কিছুটা কমলেও লোকালয়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এখনো উপজেলার কোথাও কোথাও ডাইক উপচে লোকালয়ে পানি আসছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী ভারতের বরাক নদী থেকে প্রবল বেগে পানি এসে আমলশীদ ত্রি-মোহনা দিয়ে জকিগঞ্জের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে ঢুকছে। এতে উপজেলার অনেক এলাকার সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে অর্ধ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
জকিগঞ্জ শেওলা-সিলেট ও জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বন্যা কবলিত এলাকার মাছের ঘের, ফিশারি ও পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত পশু পাখির খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেকের ঘরে কোমর পানিতে ডুবে গেছে। বিশুদ্ধ পানিরও সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসনিম জানান, বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫৫ মোট্রক টন চাল মজুদ রয়েছে। এরমধ্যে ৩২ টন বিতরণ করা হয়েছে। ২শ শুকনো খাবারের প্যাকেটও বিতরণ হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জেলা প্রশাসককে চাহিদা জানিয়েছেন।