সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গত ৪ অক্টোবর ছাতকের কূর্শী গ্রামে সংঘটিত হত্যাকান্ডের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় দক্ষিণ কূর্শী গ্রামের আতাউর রহমানের ধান ক্ষেতে মস্তকবিহীন অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় ইভা বেগম (১০) নামের এক শিশুর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘটনায় শিশুটির পিতা মোঃ মশাহিদ আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশি জিঞ্জাসাবাদে শিশুটির ভাই রবিউল হাসানের কথা বার্তায় সন্দেহজনক মনে হলে তাকে নিবিড়ভাবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সে তার বোন ইভাকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
পুলিশ জানায়, আসামি রবিউল হাসানসহ দক্ষিণ কূর্শী গ্রামের লিকসন উরফে আক্কল মিয়া ও হোসেন এই তিনজন একই গ্রামে একটি হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন। জামিনে মুক্ত হয়ে রবিউল হাসান, লিকসনসহ একই গ্রামের আহমেদ আলী (৩৮), মুজিব (৪২) ও লিটন মিলে খুনের মামলাটি সহজে আপোষ মীমাংসা করার জন্য আরেকটি খুন করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করেন।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ অক্টোবর রবিউল হাসান তার ছোট বোন ইভাকে মোবাইলের মিনিট কার্ড আনার জন্য গ্রামের একটি দোকানে পাঠায়। মিনিট কার্ড কিনে দোকান থেকে বাড়ি আসার পথে আসামিরা শিশু ইভাকে আক্কলের বাড়িতে নিয়ে যায়। আসামিরা শিশু ইভার মুখ, মাথা ও পা চেপে ধরে একটি রামদা দিয়ে ঘাড়ে কোপ মেরে মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।
পরবর্তীতে আসামিরা ছুরি দিয়ে শিশু ইভার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করে। আসামিরা শিশু ইভার দেহ আতউর রহমানের ধান ক্ষেতে এবং মাথা লিটনদের জমিতে ফেলে রেখে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামি রবিউল হাসানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে শিশু ইভার মাথা লিটনদের জমি থেকে উদ্ধার করা হয়।
হত্যার ঘটনা স্বীকার করে আসামি রবিউল হাসান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। আসমিকে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।