মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান ছাড়ার পর শুক্রবার (৫ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো দেশটির চারদিকে ‘সর্বাত্মক’ সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন।
দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে এদিন বলা হয়েছে, চীনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই সামরিক মহড়ায় তাইওয়ান ‘পুরোপুরি অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, চীনের সামরিক জাহাজ এবং বিমান তাদের স্ট্রেইট মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে।
এই মধ্যরেখাকে দুই দেশের অলিখিত বিভাজন সীমানা হিসেবে ধরা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাইওয়ান সম্পর্ক বাড়াতে চাওয়ায় চীন ইতিমধ্যে দেশটির ওপর বেশ কয়েকটি বড় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বিবিসির বিশ্লেষণে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দিলেও এই সামরিক মহড়াই চীনের প্রধান বার্তা।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবিকারী চীন বলছে, `স্বশাসিত দ্বীপটির সঙ্গে তাদের পার্থক্য একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।‘
চীনের তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তর বলেছে, `তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী, বহিরাগত শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের শাস্তি যৌক্তিক ও আইনসম্মত।‘
বেইজিংয়ের ক্রমাগত হুশিয়ারি উপেক্ষা করে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) তাইওয়ান সফর শুরু করেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার পেলোসি। বুধবার তিনি অঞ্চলটি ছেড়ে যান।
বেইজিংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পেলোসির তাইওয়ান সফরকে ঘিরে বিদ্যমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র উসকানিদাতা আর চীন আক্রান্ত পক্ষ।
চীন সরকারের কাছে তাইওয়ান ইস্যু অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাইওয়ানের বেলায় তারা ‘এক চীন নীতি’ অনুসরণ করে। চীনের বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়টিও তাদের ‘এক চীন নীতির’ উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
কিন্তু তাইওয়ান এখন নিজেদের স্বাধীন দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিত্রতা গড়তে চাইছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থায় তিন নম্বরে থাকা পেলোসির তাইওয়ান সফরকে চীন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি বলে বিবেচনা করেছে এবং বলেছে, এর বিরুদ্ধে তারা কঠোর সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাবে। চীন বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেটাই শুরু করে। শুক্রবারও থামেনি দেশটি।