চীনের আক্রমণ থেকে তাইওয়ানকে রক্ষা করবে মার্কিন বাহিনী: বাইডেন

চীন যদি তাইওয়ানে আত্রমণ করে, তাহলে মার্কিন সেনা তাদের রক্ষা করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন এই মন্তব্য করেছেন।

সিবিএসের সাথে ৬০ মিনিটের সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি সমর্থন করে তবে তাইওয়ানের স্বাধীনতা মানে না। কিন্তু যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, চীন যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে তখন কি মার্কিন বাহিনী সেখানে যাবে? বাইডেনের জবাব,‘অবশ্যই যাবে’।

আরও স্পষ্ট করার জন্য জিজ্ঞাসা করা হলে, বাইডেন নিশ্চিত করেছেন যে ইউক্রেনের বিপরীতে মার্কিন সেনারা তাইওয়ানের প্রতিরক্ষায় আসবে, যা ওয়াশিংটন আমেরিকান সৈন্যদের প্রতিশ্রুতি না দিয়ে রাশিয়াকে প্রতিহত করার জন্য বস্তুগত সহায়তা এবং সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে।

যদিও অনেক পর্যবেক্ষক বাইডেনের মন্তব্যকে তাইওয়ানের প্রতি কৌশলগত অস্পষ্টতার অবসানের ইঙ্গিত হিসাবে নিয়েছেন। তবে বাইডেনের মন্তব্যগুলো ১৯৭৯ সালের তাইওয়ান সম্পর্ক আইনে প্রবর্তিত তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী নীতির উপর সন্দেহ জাগায়। যা তাইপেইকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করার জন্য ওয়াশিংটনকে প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু সৈন্য সরবরাহ বা সরাসরি কোনও সংঘাতে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া থেকে বিরত থাকে।

এদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জনিয়েছেন, তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন নীতির কোনো বদল হয়নি। অ্যামেরিকার দীর্ঘদিনের নীতিই হলো, তাইওয়ান আক্রান্ত হলে তারা তাদের সাহায্য করবে। প্রসিডেন্ট একথা আগেও বলেছেন। তিনি টোকিওতে গিয়েও একই কথা বলেছিলেন। তাইওয়ান নিয়ে নীতির বদল হয়েছে, একথা বলা যাবে না। মার্কিন কংগ্রেসে অনুমোদিত আইন অনুসারে, তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্য করতে যুক্তরাষ্ট্রদায়বদ্ধ।

গত মে মাসে জাপান সফরের সময় বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, চীন যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে, তাহলে অ্যামেরিকার সেনা কি সেখানে যাবে? সামরিক দিক দিয়ে সেই সংঘাতে জড়াবে যুক্তরাষ্ট্র?

বাইডেন তখন বলেছিলেন, হ্যাঁ, আমরা সেই প্রতিশ্রুতি তাইওয়ানকে দিয়েছি। তখনো হোয়াইট হাউস বলেছিল, তাইওয়ান নিয়ে মার্কিন নীতির বদল হয়নি, সেটাই বাইডেন বঝাতে চেয়েছেন।

মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি গত মাসে তাইওয়ান সফরে যান। তার সফর প্রসঙ্গে চীন বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রআগুন নিয়ে খেলছে। পেলোসির সফরের পরেই তারা তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া শুরু করে দেয়। সেই থেকেই তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে।

এই মাসের শুরুতে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ বলেন, চীন ভবিষ্যতে তাইওয়ান আক্রমণ করতে পারে। তারই কৌশল তৈরি করছে তারা। এই আশঙ্কার মধ্যেই গত ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাইওয়ানের সঙ্গে ১১০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি করেছে। এই অর্থ দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার কেনা হবে।

সূত্র: আল-জাজিরা, ডয়েচে ভেলে