‘চিকিৎসাক্ষেত্রে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ মাইলফলক’

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন, চিকিৎসা পেশা একটি মহান পেশা। মানুষের অন্যতম ভরসার কেন্দ্রস্থল হচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশ্ব একদিকে যেমন আধুনিকায়নের দিকে ছুটছে, তেমনি এর সাথে পাল্লা দিয়ে জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন রোগবালাই। দেশে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু রোগব্যাধির তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। এরপরও চিকিৎসকগণ মানুষকে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলেই মানুষ অসুস্থ হলে প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। তাই চিকিৎসকেরকে সবার আগে মানবসেবাকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে ছেলে-মেয়েদের মেডিকেলে পড়ার সুযোগ থাকলেও শুধু মেয়েদের জন্য আলাদা মেডিকেল পড়ার তেমন সুযোগ নেই। দেশে প্রথম মেয়েদের আলাদা মেডিকেলে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ। এর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিপুল সংখ্যক নারী চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। এতে দেশ, জাতি ও সমাজ উপকৃত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চিকিৎসাক্ষেত্রে নারীদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।

বুধবার (৩ আগস্ট) সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১ম বর্ষ (২০২১-২০২২ সেশন) এর ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. ফজলুর রহিম কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. মঈনুল হক, উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্পন্সর কোম্পানি হলি সিলেট হোল্ডিং লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এম এ মতিন, ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. অয়েছ আহমদ চৌধুরী, সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. জি এম মনিরুল ইসলাম ও হলি সিলেট হোল্ডিং লিমিটেডের পরিচালক নুরুল ইসলাম খান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খন্দকার আবু তালহা। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন অধ্যাপক ডা. মো. আবু নাঈম চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডা. সাইকা।

এছাড়া বক্তব্য দেন, কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. শাহানা ফেরদৌস চৌধুরী, প্যাথলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ভুইয়া, সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জামাল আহমদ চৌধুরী, একাডেমিক কো-অর্ডিনেটার অধ্যাপক ডা. তহুর আব্দুল্লাহ, ফিজিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মাসুদুল আলম, এনাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রুবিনা সুলতানা ও অধ্যাপক ডা. সুমা সরকার। অধ্যয়নরত ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন তানিশা নাহিয়ান ও ভারতীয় শিক্ষার্থী হাদিয়া তাহির।

অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। নবীণ ছাত্রীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন, ভারতের সোহানা ফিজা ও বাংলাদেশের লামিয়া মুনতাহা মাইশা। অভিভাবকদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ডা. মো. মোখলেছুর রহমান ও ভারতের প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলাম লস্কর।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. ফজলুর রহিম কায়সার বলেন, নারীদের জন্য আলাদা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। উইমেন্স মেডিকেল কলেজ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসাক্ষেত্রে নারী চিকিৎসকের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। শুধু মেডিকেলে ভর্তি হলেই ভালো চিকিৎসক হওয়া সম্ভব নয়। নিজেকে একজন যোগ্য চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে অধ্যয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।