প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চা শিল্প আমাদের দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। চা বাগান দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এই চা শিল্প আমাদের দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এই চা শিল্প যেন ধ্বংস হয়ে না যায় সেদিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য আমি আমার সকল চা শ্রমিক ভাইবোনদেরকেও অনুরোধ জানাবো এই চা শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রামের চা-শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি চা শ্রমিকদের কথা শোনার জন্য বক্তব্য দীর্ঘ করেননি, শুরুতেই চা শ্রমিকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার সুযোগ পান কমলগঞ্জ উপজেলার মির্তিঙ্গা চা বাগানের গীতা পাইনকা।
গীতা পাইনকা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকায় উত্তীর্ণ করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন- ‘আপনি আমাদের মা, আপনার কথা আমরা সবসময় ভাবি। আপনি যা বলবেন আমরা তাই শুনবো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতো আপনিও আমাদের পাশে থাকবেন। আপনি আমাদেরকে কখনো ছেড়ে যাবেন না। বঙ্গবন্ধু আমাদের এদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছেন বলেই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, আপনার কাছে ভূমির অধিকার চাই।
কনফারেন্সের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং দেশের বিভিন্ন আন্দোলনে শহীদ চা শ্রমিকদের স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে উপহার দেয়ার জন্য চা শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা শ্রমিক এবং এই চা শিল্প নিয়ে কাজ করে গেছেন। দেশে চা নিয়ে কোনো বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ছিলো বঙ্গবন্ধু শ্রীমঙ্গলে দেশের একমাত্র চা গবেষণা ইন্সটিটিউট গঠন করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারও আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবেনা, চা শ্রমিকদের শিক্ষা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সকল সুবিধা প্রদান করা হবে।
শনিবার কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের দলই ভ্যালি ক্লাব মাঠে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চা শ্রমিকদের বৈঠকস্থলে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার -৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ প্রশাসক মিছবাহুর রহমান।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সঞ্চালনায় এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, চা বাগান ব্যবস্থাপক, বিভিন্ন ভ্যালী ও বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ সহ মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানের সহস্রাধিক চা শ্রমিক নারী ও পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চা শ্রমিকরা চা খেতে মৌলভীবাজার এ দাওয়াত করেন।