চতুর্থবারের মতো স্পিকার হলেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

টানা চতুর্থবারের মতো জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম বৈঠকে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

এর আগে বিকেল ৩টায় একাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।

অধিবেশনের শুরুতে ডেপুটি স্পিকার সবাইকে স্বাগত জানান। এরপর নতুন স্পিকার নির্বাচন করা হয়। সংসদে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পিকার হিসেবে শিরিন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সম্পাদক চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। স্পিকার হিসেবে অন্য কোনো মনোনয়ন না থাকায় কণ্ঠ ভোটে স্পিকার নির্বাচিত হন শিরিন শারমিন চৌধুরী।

এরপর সংসদ ২০ মিনিটের জন্য মুলতবি করা হয়। এসময় সংসদ ভবনে অবস্থিত রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে নতুন স্পিকারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

স্পিকার নির্বাচনের সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সরকারি ও বিরোধী দলের প্রায় সকল সংসদ সদস্য সংসদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন চৌধুরী। পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিলে হলেও শিরীন শারমিনের জন্ম ১৯৬৬ সালে ৬ অক্টোবর ঢাকায়। তার বাবা সাবেক সচিব রফিকউল্লাহ চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব; মা অধ্যাপক নাইয়ার সুলতানা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।

শিরীন শারমিন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এলএলবি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যের এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে ‘দ্যা রাইট টু লাইফ’ অর্থাৎ মানুষের জীবনের অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক আইন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে জনস্বার্থ, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করেছেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন মামলার প্যানেল আইনজীবী ছিলেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিরীন শারমিন চৌধুরী নবম জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তৎকালীন স্পিকার আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল দেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন। এরপর থেকে তিনি একটানা ১০ বছরেরও বেশি এই দায়িত্বে আছেন।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ এবার টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকারে সরকার গঠন করেছে। আর চতুর্থবারের মত স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন শিরিন শারমিন চৌধুরী।