বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বান্ধবী বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান জানান, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বান্ধবী বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে, বুধবার (৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে ডিএমপির রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে ছেলে হত্যার অভিযোগ এনে বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজনের নামে একটি মামলা (নং-৯) দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত চার বছর ধরে ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে ফারদিনের। ওই তরুণী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। ৪ নভেম্বর ঘোরাফেরার পর রাত সোয়া ১০টায় বাসায় ফিরে যান বলে পুলিশকে জানান ওই তরুণী। আরও পড়ুন- মামলা করলেন ফারদিনের বাবা, আসামির তালিকায় বান্ধবী বুশরাও
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৪ নভেম্বর রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় বান্ধবী বুশরাকে বাসায় যাওয়ার জন্য এগিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের তিনদিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ ফরহাদ বলেছিলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, তার মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য উপাত্ত ও আলামত মহাখালী ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে কীভাবে মারা হয়েছে।
ফারদিনের বাবা কাজী নুর উদ্দিন রানা ৮ নভেম্বর বলেছিলেন, দেশের তিনটি শীর্ষ বিদ্যাপিঠে সুযোগ পাওয়ার পর সে বুয়েটে ভর্তি হয়। তবে আবাসিক হলের পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে হলে যেতে চায়নি। ফারদিন বাসায় থেকেই তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিলো। আমি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার করুন।
