সর্বশেষ ভয়াবহ বন্যার ছোবলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার-বালাগঞ্জের ইলাশপুর সড়ক। দুই উপজেলার সংযোগ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। একেকটি গর্ত যেন একেকটি মরণ ফাঁদ। ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে যানবাহন। নিয়মিত সংস্কার না হওয়া এবং সদ্য সমাপ্ত বন্যার করালগ্রাসে সড়কটি এখন ক্ষত-বিক্ষত। খানাখন্দের বেহাল অবস্থায় গাড়ি চলাচলের কারণে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।
বুধবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় সড়কটির কালাসার অংশের গর্তে আটকে যায় ট্রাক। প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টার পর স্বাভাবিক হয় যান চলাচল। এভাবে প্রায়ই আটকা পড়ছে বিভিন্ন যানবাহন।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার-বালাগঞ্জের ইলাশপুরের ১৬ কিলোমিটারের সড়কের প্রায় স্থানে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গর্ত ও ভাঙন দেখা দিয়েছে কালাসারা হাওরের অংশে।
এ ব্যাপারে পথযাত্রী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সড়কের এই বেহাল দশায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। চলাচলকারী যানবাহনগুলো বিভিন্ন সময় শিকার হচ্ছে নানা দুর্ঘটনার। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ ও টায়ার। এ সড়কের দ্রুত সংস্কার এখন এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি।
এ সড়ক দিয়ে এলাকার অর্ধশতাধিক গ্রামের হাজারো মানুষ চলাচল করেন প্রতিদিন। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোয়ালাবাজার আসতে এ রাস্তাটি একমাত্র সুবিধাজনক মাধ্যম। যোগাযোগের সুবিধার্থে সুদূর ফেঞ্চুগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করেন।
কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকার কারণে শুকনো মৌসুমে ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তাটি নরবড়ে হয়ে পড়ে ছিল। দেখা দিয়েছে ভাঙ্গনের। এখনই রাস্তার সংস্কার না করা হলে ভাঙন রোধ করা যাবে না বলে জানান স্থানীয়রা।
অটোরিকশা চালক খলকু মিয়া জানান, ‘এবারের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীদের চলাচলের সমস্যার পাশাপাশি আমাদের গাড়িরও সমস্যা হচ্ছে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের দ্রুত সংস্কার চাই।’
ব্যবসায়ি সোহেল মিয়া বলেন, ভয়াবহ বন্যায় রাস্তায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা চলে গেছে কিন্তু তার ক্ষত রয়ে গেছে সড়কজুড়ে। এখন ট্রাক গর্তে পড়েছে। কাল হয়তো অন্য গাড়ি উল্টে আরো বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে। তাই দ্রুত সংস্কার করা হোক।
এ ব্যাপারে বালাগঞ্জ উপজেলা এলজিআরডি কার্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাকিম হোসাইন সাঈদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রাস্তার বেহাল অবস্থার আমরা দেখেছি। এ ব্যাপারে সংস্কারের জন্য ঢাকা লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সংস্কার করা হবে।’
উল্লেখ্য, গোয়ালাবাজার-ইলাশপুর ১৬ কিলেমিটার রাস্তা ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখ উদ্বোধন করেন, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী। রাস্তাটি নির্মাণ করেছিলো স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে মেসার্স এন আলম।