গোলাপগঞ্জে ৩ কিলোমিটার রাস্তা খালের পেটে, সীমাহীন ভোগান্তি

একসময় এ রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করতো। এখন এ রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচল করাও দায়। গেল কয়েক বছর ধরেই এমন অবস্থা। বিভিন্ন দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে স্মারকলিপি দিয়েও মিলছে না প্রতিকার। প্রতিকার মিলবে কি না তাও বলা যাচ্ছে না।

বলছিলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলার উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের উত্তর আলমপুর-মাসুরা রাস্তার কথা। যে রাস্তাটি উত্তর আলমপুর থেকে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের আওতাধীন মাসুরা গ্রামের খুশীদের খেয়াঘাট হয়ে ভাদেশ্বর মোকামবাজারের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। যার দীর্ঘ হবে প্রায় ৩ কিলোমিটার।

উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের আওতাধীন উত্তর আলমপুর, কেওটকোনা, দক্ষিণ আলমপুর, কোনাগাঁও, কুলিয়া, বাদেপাশা, বৃহত্তর বাগলা, সুপাটেকসহ কয়েকটি গ্রামের একমাত্র রাস্তা এটি। প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের রাস্তা প্রায় ৭৫ ভাগ খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হয়তো কয়েক বছর লাগবে না, কয়েক মাসের ভিতরে বাকি ২৫ ভাগও খালের বুকে চলে যাবে।

রাস্তাটি সংস্কার করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কষ্ট লাঘব করার জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে প্রতিকার মিলছে না।

আজ থেকে দুই বছর আগে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এরপর একই মাসের ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেটের জেলা প্রশাসক ও একই দিন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট লুৎফুর রহমানের কাছে ও একই বছরের ৪ নভেম্বর সিলেট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও চলতি বছরের ২৮ আগস্ট গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিমের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানা যায়, রাস্তাটি উত্তর আলমপুর থেকে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের আওতাধীন মাসুরা গ্রামের খুশীদের খেয়াঘাট হয়ে ভাদেশ্বর মোকাম বাজারের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। ঐ রাস্তার উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর পশ্চিম পার থেকে শুরু রাস্তার পার্শ্ববর্তী খাল ভাদেশ্বর ইউনিয়নের আওতাধীন কুড়া নদীর সাথে মিলিত হয়েছে।

কয়েকটি গ্রামের হাজারো শিক্ষার্থী বর্ষামৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগের দিন গ্রাম ছেড়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে চলে যান। বিশেষ করে রোগীদের জন্য সবচেয়ে কষ্টসাধ্য এ রাস্তা। স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বাজার নিয়ে আসতে না পাড়ায় পড়তে হয় ক্ষতির মুখে।

রাস্তা সংস্কার বিষয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহত ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কয়েকবার এলাকাবাসী মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। রাস্তা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে একদিন রাস্তাহারা হয়ে যাবে কয়েকটি গ্রামের লোকজন। তাদের প্রাণের দাবি রাস্তাটি সংস্কার করে চলাচলের পথ সুগম করা।

বৃহত্তর এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে গোলাপগঞ্জ উপজেলার উত্তর আলমপুর হতে মাসুরা গ্রামের খুশীদের খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার করে জনসাধারণের নিরাপদ চলাচলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দাবি জানান এলাকাবাসী।