সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নে ২য় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছানা মিয়া ও শিশুর বাবা’সহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করা হয়।
গত রোববার (২১ আগস্ট) এ মামলাটি করেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (আসক) ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র পক্ষে বাংলাদেশ মানবধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি সৈয়দ আকরাম আল সাহান। মামলা নং -২১-১৬০/ ২১-০৮-২০২২ইংরেজি)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মজিদপুর গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে আলবাব আহমদ (১৯) ও মৃত মজলু মিয়ার ছেলে মো. তানহার (১৮) নামের দুই যুবক খালপার গ্রামের ২য় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশু (৮) কে বলাৎকার করে। এ সময় তারা ঘটনাটি সম্পূর্ণ মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।
বিষয়টি আন্তজার্তিক মানবধিকার সংস্থা (আসক) ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র বিষয়টি নজরে আসে। পরে তারা বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ভুক্তভোগী শিশুর পিতাসহ এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালীর হস্তক্ষেপে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হয়ে গেছে। এরপর সমাজের শিশুদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (আসক) ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র পক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা’র সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি সৈয়দ আকরাম আল সাহান বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত ও এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সাথে জড়িতদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। এর সাথে জড়িত মূল আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিষয়টি জানতে সরেজমিনে এলাকায় গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আলবাব ও তানহার শিশুটিকে বলাৎকার করে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করলে খালপার গ্রামের কয়েকজন যুবক ঘটনার প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে আসামীদের সাথে একটু হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে আসামী তানহারের বর্তমান পিতা ওলী মিয়া তার স্ত্রী, আসামী তানহারের মাকে দিয়ে খালপার গ্রামের কয়েকজন যুবকের ওপর ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রামের যুবকদের ওপর মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদ করেন গ্রামের মুরব্বিরা। তাদের প্রতিবাদের কারণে বাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছানা মিয়ার হস্তক্ষেপে ছিনতাইয়ের মিথ্যা মামলার আপোষ হয়। তবে বলাৎকারের বিষয়ে কোন সালিশ বা আপোষ হয়নি বলে জানান তারা। বরং আসামীর চাচা ছানা মিয়া, বর্তমান পিতা ওলি মিয়া ভুক্তভোগী শিশুর পিতার সাথে আপোষ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেন।
তারা আরো বলেন, একটি মহল বলাৎকারের বিষয়টির মোড় ঘুরিয়ে নিতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় আপোষ হওয়ার বিষয়টি বলাৎকারের ঘটনায় আপোষ হয়েছে বলে ছড়াচ্ছে, যাতে নিরীহ মুরব্বিরা হয়রানির শিকার হন।
এ ব্যাপারে বাঘা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছানা মিয়ার বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনের নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।