সিলেটের গোলাপগঞ্জে নাইয়ান আহমদ (১৩) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শাফি আহমদ নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
রোববার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাণাপিং চন্দনভাগ আয়শা সিদ্দিকা (রা.) ইন্টা. তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন আহত ছাত্রের চাচা আমির উদ্দিন খান। তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধান না হলে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় আমাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
আহত মাদ্রাসাছাত্র উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাযিলপুর গ্রামের হোসাইন আহমদের ছেলে। আর অভিযুক্ত শিক্ষক শাফি আহমদ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ফুলবাড়ি টিকরপাড়া গ্রামের মোবারক আলীর পুত্র।
আহত ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় হিফজ বিভাগের ওই ছাত্র রুটিন মোতাবেক পড়া মুখস্ত বলতে না পারার অজুহাতে বেত্রাঘাত দিয়ে পিটিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষক শাফি আহমদ। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এ ঘটনার পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্রের কোনো অভিভাবককে অবগত না করে এবং কোনো প্রকার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে ছাত্রকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মাদ্রাসায় আটকে রাখে। এরপর রাতে এশার নামাজের সময় ছাত্রটি সুযোগ বুঝে মাদ্রাসা থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা ওই শিক্ষক।
এরপর রাত ৯টার দিকে মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রের এক অভিভাবক জানতে পারেন সে মাদ্রাসায় নেই। পরে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে গ্রামের একটি দোকানে আশ্রিত অবস্থায় পান। এরপর সে নির্যাতনের ঘটনাটি অভিভাবকদের খুলে বলে। এরপর তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানা যায়।
বিষয়টি জানতে আয়শা সিদ্দিকা (রা.) ইন্টা. তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম হাফিজ বদরুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছাত্রকে পিটুনির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে এলাকার মুরব্বিদের সাথে আজ (সোমবার) একটা বৈঠক আছে। বিষয়টি সমাধান হবে।
তবে তিনি পিটুনির বিষয়টি পুরোপুরি খুলে বলতে রাজি হননি। আর অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। ওই ছাত্রের পক্ষ থেকে এখনও কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। যদি কোনো অভিযোগ দেওয়া হয় তাহলে আমরা তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।