সিলেটের গোলাপগঞ্জে ‘দেওয়ানের পুল’ ভাঙ্গা ও না ভাঙ্গা প্রসঙ্গ নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২২ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ব্রিজ সংলগ্ন মাঠে তিন ইউনিয়নের ব্যাপক সংখ্যক মানুষের সামনে এ গণশুনানী অনুষ্ঠিত হলে লিখিতভাবে অনেকেই তাদের মতামত পেশ করেন।
উল্লেখ্য, দেওয়ানের সড়ক সংস্কার ও প্রসস্তকরণের কাজ শুরু হলে শত বছরের প্রাচীনতম দেওয়ানের ব্রিজটিও ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে পক্ষে বিপক্ষে প্রচার প্রচারনা চলতে থাকলে ব্রিজ ভাঙ্গার কাজ স্থগিত রাখতে সরকারিভাবে নির্দেশনা জারী করা হয়। এতে শুধু ব্রিজ নয়, রাস্তা নির্মাণের কাজও স্থগিত হয়ে যায়।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থল যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে হেতিমগঞ্জ টু ঢাকা দক্ষিণ দেওয়ান সড়ক। গোলাপগঞ্জ উপজেলা সদর ব্যবহার না করে ঢাকা দক্ষিণ, ভাদেশ্বর সহ পূর্ব সিলেটে যাতায়াতে এ রাস্তাটি অনেকটা সহজ মাধ্যম। সাম্প্রতিক সময়ে এ রাস্তাটি প্রশস্তকরণ, মেরামত ও উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হাতে নিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ব্যবস্থাপনায় কাজ শুরু হলে মধ্য পথে প্রাচীনকালের স্থাপনা দেওয়ান ব্রিজটিও ভাঙ্গার কবলে পড়ে। ৩ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দের এ ব্রিজটির ভাঙ্গার কাজ প্রায় ৪০ ভাগ সম্পন্ন হলে তা বন্ধের লক্ষ্যে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে দাবী ওঠে।
মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রচারিত হতে থাকলে এক পর্যায়ে সরকারী নির্দেশনায় ব্রিজ ভাঙ্গা ও নতুন ব্রিজ তৈরী ইত্যাদি কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়। এ দিকে স্থানীয় জনগণ ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে তা ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের জন্য দাবী উত্থাপন করে মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। ফলে দেওয়ান ব্রিজ ভাঙ্গা ও নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
গণশুনানীতে লক্ষীপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহতাব উদ্দিন জেবুলের সভাপতিত্বে, ইউপি সদস্য এম এ আহাদ ও এনামুল হক আবুলের পরিচালনায় গণশুনানী অনুষ্ঠানের আলোচনায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শিলা, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন, সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সভাপতি সাংবাদিক আব্দুল আহাদ, ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ, ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, ফুলবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী নুরুল আলম, শ্রীবহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব মজনু মিয়া প্রমুখ।
এছাড়াও আশপাশের ৩টি ইউনিয়নের ব্যাপক সংখ্যক লোক তাতে অংশগ্রহণ করে তাদের অভিমত প্রকাশ করেন। উপস্থিত লোকজন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ জনস্বার্থে ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের পক্ষে মত পোষণ করতে দেখা যায়।
এসময় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এলজিইডির সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী ইনামুল কবির, গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান।