সিলেটের গোলাপগঞ্জে হরতালে পিকেটিং করার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (২৯ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের হেতিমগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত হন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ ও ছাত্রদল কর্মী হাবিব আহমদ। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের আরেক কর্মী আব্দুস শহীদকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
জানা যায়, হরতাল পালনে রোববার ভোর ৬টায় হেতিমগঞ্জ বাজারে আসেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহইয়া আহমদ ও যুবদল নেতা হাবিব। আসার আগে তারা স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাদেরকে বাজারে আসতে বলেন। এসময় বাজারে অবস্থান নেওয়ার আগেই তামিম ও হাবিবের উপর দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
এসময় তাদের রামদার আঘাতে গুরুতর আহত হন বিএনপি নেতা তামিম ইয়াহইয়া আহমদ। হামলাকারীরা তাকে ধাওয়া করলে তিনি আত্মরক্ষার্থে বাজারের পশ্চিম প্রান্তে মোল্লাগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আশ্রয় নেন। মাদরাসা রোডে পালিয়ে যান তার সাথে থাকা হাবিব।
এরপর তামিমের আহত হওয়ার খবর শুনে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কয়েকজন কর্মী বিদ্যালয়ের সামনের সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে আসামাত্র বাজারের দিক থেকে ছুটে আসেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। তাদের সাথে দুই গাড়ি পুলিশও ছিলো।
ফাঁকা গুলির আওয়াজে হরতালকারীরা গ্রামের ভেতরের রাস্তায় ঢুকে গেলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় নারী-পুরুষ। প্রাতঃভ্রমণে বের হওয়া মহিলাসহ মসজিদের মক্তবে আসা শিশুরা ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন।
একপর্যায়ে গ্রাম্য রাস্তায় মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রদল কর্মী আব্দুস শহিদকে ব্যাপক মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এরপর পুলিশ আহত অবস্থায় আব্দুস শহিদকে গ্রেপ্তার করে মোটরসাইকেলসহ থানায় নিয়ে যায়।
অপরদিকে, আহত তামিম ইয়াহইয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় জনতা। তিনি গ্রামেরই একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ঘটনার পর পরই বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকি মোল্লাগ্রামের ভেতরেও পুলিশী টহল জোরদার করা হয়। সকাল ১০টার দিকে ৫ গাড়ি পুলিশ গ্রামের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক সুমন চন্দ্র সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ছাত্রদলের একজন কর্মীকে মোটরসাইকেল সহ আটক করে থানায় আনা হয়েছে।