সারাদেশের ন্যায় সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় গত দু সপ্তাহ ধরে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে উপজেলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন চোখ ওঠা রোগী রয়েছেন। দিন দিন চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে দেখা দিয়েছে ড্রপ সংকট। আর যে সকল ফার্মেসিতে ড্রপ আছে সেগুলোতে বেশি দামে ড্রপ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে ড্রপ বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ স্বীকারও করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঔষধ ব্যবসায়ী। তাদের দাবি, গত কয়েকদিন থেকে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যে কারণে ড্রপের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বেশি থাকায় ড্রপ সংকট দেখা দিয়েছে। আর কোম্পানি থেকেও চাহিদা অনুযায়ী ড্রপ পাওয়া যাচ্ছে না।
গোলাপগঞ্জে ড্রপ সংকট দেখা দিয়েছে এমন খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীর বেশ কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরে ঔষধ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
হাবিল আহমদ নামে এক ঔষধ বিক্রেতা বলেন- ‘আসলেই ড্রপের সংকট রয়েছে। আমাদের ফার্মেসিতেও ড্রপ নেই। চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন সংকট দেখা দিয়েছে।’
রুবেল আহমদ নামে একজন বলেন- ‘গোলাপগঞ্জের অনেক ফার্মেসিতে ড্রপ খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। এরপর বৈটিকর বাজারে এসে আর ৪/৫টি ফার্মেসি খুঁজে ড্রপ পাইনি।’
লিয়াকত আলী নামে চোখ ওঠা একজন রোগী বলেন- ‘গোলাপগঞ্জ ড্রপ পাইনি। ঢাকাদক্ষিণ বাজার থেকে কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরে এরপর ড্রপ পেয়েছি।’
এদিকে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চক্ষু চিকিৎসকের চেম্বারেও মানুষের ভিড় বাড়ছে। সাধারণ চোখ ওঠার কারণে অনেকের চোখ লাল হয়ে পানি পড়তে দেখা গেছে। কারো কারো চোখের পাতা ফুলে চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে। অনেকেই চোখের যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকরা ড্রপ ও কালো চশমা পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। চোখ ওঠার কারণে অনেক নারী-পুরুষকে চোখে কালো চশমা পরিধান করে চলাচল করতে দেখা গেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ‘ঋতু পরিবর্তনের কারণে এসময় চোখের রোগবালাই হয়ে থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা। এটি আসলে একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। কনজাংটিভাইটিস বা চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বলে। চোখ ওঠার মূল কারণ ভাইরাস এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। তবে চোখ ওঠায় আক্রান্ত কারও চোখের দিকে তাকালে কারোর চোখ ওঠে না।’
‘ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত চোখ কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু আশপাশে অনেককেই আক্রান্ত করে বা করতে পারে। তবে চোখ ওঠা রোগী মূলত সে তার নিজের জন্য সমস্যা নয়, বরং অন্যের জন্য সমস্যা। কারও চোখ ওঠা হয়তো তিন দিনে ভালো হয়ে যায়, কারোর আবার ৩ সপ্তাহ লাগতে পারে।’