গোলাপগঞ্জের ২ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহিদমিনার!

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও গোলাপগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহিদমিনার। ফলে মহান ২১শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের পুষ্পস্তবকের মাধ্যমে যথাযত শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়টি উপেক্ষিতই রয়ে গেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ২৬টি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শহিদমিনার। বাকি ১৫৪ বিদ্যালয়ে শহিদমিনার নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় স্কুল ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে ১৯টি স্কুলে শহিদমিনার রয়েছে। ২৪টি স্কুল ও বাকি মাদ্রাসাগুলোর একটিতেও শহিদমিনার নেই।

এদিকে শহিদমিনার না থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কলাগাছ দিয়ে শহিদমিনার তৈরি করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা অন্য প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শহিদমিনারে ফুল দিয়ে থাকেন।

সাদিকুর রহমান নামে এক শিক্ষক বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহিদমিনার থাকা জরুরি। এতে কোমলমতি শিশুরা ৫২’র ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে পারবে। বড় হয়ে তারা দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে।

সাহেদ আহমদ নামে আরও এক শিক্ষক বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১টি শহিদমিনার স্থাপন করা এখন সময়ের দাবী। দেশ দিনদিন এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার ইচ্ছা করলে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১টি শহিদমিনার স্থাপন করা সম্ভব।

রণকেলী নয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেন্দ্র চন্দ্র দাশ বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে স্কুলে ১৮৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। রয়েছেন ৬ জন শিক্ষক। সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকায় প্রতিষ্ঠার এতো বছরেও শহিদমিনার নির্মাণ হয়নি।’

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহিদমিনার হোক। ভাষার জন্য যারা জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তাদেরকে আমাদের সন্তানরা ভাল করে চিনতে হবে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দেওয়ান নাজমুল আলম বলেন, শহিদমিনারের জন্য সরকারিভাবে আলাদা কোন বরাদ্দ দেওয়া হয় না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শহিদমিনার নির্মাণ হয়ে থাকে। এজন্য প্রতিটি এলাকার মানুষ যদি এগিয়ে আসেন তাহলে শহিদমিনার নির্মাণ করা সম্ভব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী মজুমদার বলেন, উপজেলার স্কুল ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র ১৯টি স্কুলে শহিদমিনার রয়েছে।