গোলাপগঞ্জের বাঘায় বন্যা : ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট প্লাবিত

টানা বর্ষণে সুরমার পানি বৃদ্ধিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সুরমার পানি তীব্র বেগে প্রবেশ করছে বাঘার হাওরে। ফলে অব্যাহত রয়েছে পানিবৃদ্ধি, বাড়ছে আতঙ্ক।

ইউনিয়ন থেকে সিলেট শহরের প্রধান সংযোগ সড়ক গাজি বোরহান উদ্দিন রাস্তার অনেকাংশই পানির নিচে। ফলে বিকল্প রাস্তা ধরে শহরে যেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশাজীবী মানুষদের।

বিশেষ করে নলুয়া গ্রামের অন্তত ১ কিলোমিটার সড়কে হাঁটু পানির ওপরে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এছাড়াও মজিদপুর, জালালনগর, রুস্তমপুর, বাঘা বাজার, নয়া মার্কেট সহ বিভিন্ন স্থানে মূল সড়কে পানি উঠেছে।

এছাড়াও বাঘা ইউনিয়ন পরিষদে যাবার একমাত্র রাস্তাটি গৌরাবাড়ি-গোলাপনগর সংযোগস্থল থেকে বিলের (ডা-বিল) পানিতে প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত কয়েক হাজার মানুষ৷

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের রুস্তমপুর, লালনগর, জালালনগর, মজিদপুর, খালপাড়, তুড়ুকভাগ, নলুয়া গ্রামগুলো সুরমাতীরবর্তী হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নিচু স্থানের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এলাকার রাস্তাগুলো প্রায় প্রত্যেকটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন।

রুস্তমপুর এলাকার কৃষক লিটন মিয়া জানান, ‘গোপাটে (রাস্তায়) কোমর পর্যন্ত পানি থাকায় কোনোমতে গরু-বাছুর তুলা ফ্যাক্টরিতে (বাড়ির অদূরে) রেখে এসেছি। ঘরে পানি উঠে গেলে ধানসহ অনেক মূল্যবান জিনিস ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’

লালনগর এলাকার জলিল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ঘরে ঈদের দিন সকাল থেকে হাঁটু পানি। আশেপাশের অন্তত ৩০টিরও বেশি ঘরে পানি উঠেছে। জান-মালের মায়া ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া ছাড়া গতি নাই।’

এসব এলাকার মানুষজন কোনোমতে নৌকাযোগে দ্রুত আশ্রয়স্থলে গমন করছেন। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে দেখা গেছে অনেকেই৷ কেননা বেশ কয়েকদিন যাবত, হাওরে পানি আসার কারণে প্রবাদে বিশ্ব খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন গোলাপগঞ্জ জানিয়েছে, ‘বাঘায় আমাদের আশ্রয়কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত রয়েছে, ত্রাণ সহায়তা চলমান রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ট্যাগ অফিসার, মেডিক্যাল ও কুইক রেসপন্স টিম এবং কন্ট্রোল রুম গঠন করা হয়েছে। আমরা সবসময় তৎপর রয়েছি। বাঘা সহ সকল স্থানের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। সাবধানে থাকবেন,নিরাপদে থাকবেন।’