গুলশান গ্রেনেড হামলা দিবসে মহানগর আ.লীগের আলোচনা সভা

২০০৪ সালের ৭ আগস্ট গুলশান সেন্টারে জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক মহানগর আওয়ামী লীগের সভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহত সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তালতলাস্থ গুলশান হোটেলের ৩য় তলার হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এবং গুলশান সেন্টারে গ্রেনেড হামলায় আহত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।

তিনি বলেন, আগস্ট আসলেই বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকার গোষ্ঠী বারবার সক্রিয় হয়ে উঠে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে সপরিবারে হত্যা করার পরে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য শাহ এম.এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা করে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলা, ৭ আগস্ট গুলশান গ্রেনেড হামলা সহ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরী ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা করা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন করে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১৯ বার চেষ্টা করে। নেতা-কর্মীদের ওপর গ্রেনেড হামলা করে। এখনো তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু গ্রেনেড মেরে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। যতই ষড়যন্ত্র করা হোক আগামীতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধভাবেই এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ৭ আগস্ট গুলশান গ্রেনেড হামলায় যে সকল নেতৃবৃন্দ নিহত ও আহত হয়েছিলেন তাদের ত্যাগ ও অবদান দল ও জাতি কখনো ভুলবে না।

আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট নাসির উদ্দীন খান।

তিনি বলেন, ‘৭ আগস্টের গুলশান গ্রেনেড হামলা ছিল খুবই ন্যাক্কারজনক হামলা। এই হামলায় মিসবাহ ভাই, মফুর ভাই, জাকির ভাই, শওকত ভাই, এনাম ভাই মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। ইব্রাহিম ভাই নিহত হয়েছিলেন। তাছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও আহত হয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ইব্রাহিম ভাইয়ের লাশ নিয়ে আমাদেরকে মিছিল করতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এরকম একটি পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু রাজনীতি থেকে আমরা সরে যাইনি। তারেক জিয়া ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ আগস্ট হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। বিএনপি-জামায়াত এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্রের জবাব রাজপথেই দেওয়া হবে।’

সভার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। আগস্ট আসলেই ঐ বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকার গোষ্ঠী বারবার আঘাত আনার চেষ্টা করে। তারা সক্রিয় হয়ে উঠে। ২০০৪ সালের ৭ আগস্ট অত্র সেন্টারেই মহানগর আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ঐ গোষ্ঠী গ্রেনেড হামলা করেছিল। গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছিল মহানগরের আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী। আহত হয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও আহত হয়েছিলেন। এখনো নেতৃবৃন্দরা শরীরে বিদ্যমান স্প্রিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণাসহকারে জীবন অতিবাহিত করছেন। সেই দুঃসহ স্মৃতি সবাইকে এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়।

তিনি ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলার তীব্র নিন্দা করেন। এ ধরনের ঘটনা যাতে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিগোষ্ঠী আর না করতে পারে সে জন্য সবাইকে সোচ্চার হতে আহবান জানান।

এছাড়াও আলোচনা সভায় স্মৃতিচারণ করেন, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবীর উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পরিষদ সদস্য এডভোকেট রাজ উদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আজম খান, জামাল আহমদ চৌধুরী, সাবেক সদস্য মো. আব্দুস সোবহান।

বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, দপ্তর সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান, উপদেষ্টা আব্দুল মালিক সুজন, কার্যনির্বাহী সদস্য এডভোকেট মোহাম্মদ জাহিদ সারোয়ার সবুজ, ২৭ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছয়েফ খাঁন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক আজিজুল হক মঞ্জু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ হোসেন রবিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি, সহ-প্রচার সম্পাদক সোয়েব আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্যবৃন্দ মো. আব্দুল আজিম জুনেল, রোকসানা পারভীন, খলিল আহমদ, আবুল মহসিন চৌধুরী মাসুদ, ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান সুহেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিবৃন্দ মুহিবুর রহমান ছাবু, সালউদ্দিন বক্স সালাই, সাজোয়ান আহমদ, আব্দুস সালাম সাহেদ, আনোয়ার হোসেন আনার ও সাধারণ সম্পাদবৃন্দ সৈয়দ আনোয়ারুস সাদাত এম.এ খান শাহীন, জায়েদ আহমেদ খাঁন সায়েক, এডভোকেট মোস্তফা দিলোয়ার আজহার, মানিক মিয়া, ফজলে রাব্বি মাসুম, আনসার আহমদ কয়েছ, বদরুল ইসলামসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য নেতা-কর্মীবৃন্দ।