রাত পোহালেই বহুল প্রতীক্ষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনে নগরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১৩ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশ না নিলেও এ নির্বাচনের দিকে শুধু এ নগরবাসী নয়, পুরো জেলাসহ সারা দেশ এমনকি বিশ্ব তাকিয়ে আছে। প্রায় ১২ লাখ ভোটার এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ইভিএম মেশিনে ভোট প্রদান করবেন।
প্রিসাইডিং অফিসারদের মাধ্যমে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন তথা ইভিএমসহ অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (২৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে গাজীপুর মহানগরের আলাদা ৫টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে এসব নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
এর মধ্যে গাজীপুর সিটির ধীরাশ্রম জিকে হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১২০টি কেন্দ্রের, চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড স্কুল থেকে ১১৫টি কেন্দ্রের, দারুস সালাম মাদ্রাসা থেকে ৫৮টি কেন্দ্রের, আজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৬৮টি কেন্দ্রের ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১৯ কেন্দ্রের নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হচ্ছে।
১৯৫ নম্বর কেন্দ্র বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) প্রগতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী অন্যান্য সরঞ্জাম বুঝে নিয়েছি। কেন্দ্রে পৌঁছে ইভিএম মেশিন চালিয়ে দেখব। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে সাথে সাথে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়ে পরিবর্তন করা হবে। কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ভোট সুষ্ঠের জন্য ৪ জন পুলিশ ও ১২ আনসার সদস্য দেয়া হয়েছে।’
১৮৬ নম্বর কেন্দ্র শহীদ স্মৃতি স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘ভোট গ্রহণের সময় যদি মেশিনে সমস্যা হয় তাৎক্ষণিক কেন্দ্রে একজন ট্রাবল টিএস থাকবে। তারা ইভিএম মেশিনের সমস্যা সমাধান করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের শঙ্কা এখন পর্যন্ত নেই। যদি কেন্দ্রে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয় সে ক্ষেত্রে কমিশনকে অবহিত করে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা গাজীপুরবাসীকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেখিয়ে দিতে চাই।’ তিনি আরো বলেন, ‘মোট ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্র আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সেই কেন্দ্রগুলোকে আমরা আলাদাভাবে নজরদারিতে রাখব এবং সেখানে ফোর্স বাড়িয়ে দিব।’
রিটানিং কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে মোট ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্র অতি গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত ১৯ জনসহ সর্বমোট ৭৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও র্যাবের ৩০টি টিম এবং ২০ প্লাটুন বিজিবিসহ সর্বমোট প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।