গরমে কেন মাথাব্যথা হয়

গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ চলছে। এমন চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় নানা রকম শারীরিক সমস্যা হয়। তেমনই একটি হলো মাথাব্যথা। কিন্তু এ সময় কেন মাথাব্যথা হয়? চলুন তবে জেনে আসি।

পানিশূন্যতা

প্রচণ্ড গরমে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্যতা ও লবণের তারতম্য হয়। এর উপসর্গ হিসেবে মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম করা, দুর্বল লাগতে পারে।

দীর্ঘক্ষণ সূর্যালোকের সংস্পর্শ

কারও কারও ক্ষেত্রে সরাসরি সূর্যের আলো চোখের ওপর পড়লে মাথাব্যথা শুরু হয়। অতিরিক্ত গরমে মাথার সূক্ষ্ম রক্তনালি প্রসারিত হওয়ায় এ মাথাব্যথা হয়।

বায়ুচাপের পরিবর্তন

অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় স্বাভাবিক বায়ুচাপ কমে যায়, যা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।

প্রচণ্ড গরমজনিত দুর্বলতা বা হিট এক্সহশন

দীর্ঘক্ষণ প্রচণ্ড গরমে কাজ করায় শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে গেলে অনেক সময় শরীর ঠিকভাবে ঠান্ডা হয় না, যাকে হিট এক্সহশন বলে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম মাথাব্যথা।

মাইগ্রেন

কারও মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে গরমে তাঁকে বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক। বাইরে প্রখর রোদে বেশিক্ষণ থাকলেই মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়। এ সময় মাথাব্যথার সঙ্গে চোখব্যথা, বমির ভাব হয়ে থাকে।

শারীরিক পরিশ্রম

গরমে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়। এ ছাড়া বেশি ঘাম হওয়ার দরুন এ সময় শরীর দীর্ঘক্ষণ ভেজা থাকে। এতে সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অতিরিক্ত সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে সাইনুসাইটিস হয়। ফলে মাথাব্যথা হতে পারে।

ঘুমের অভাব

পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, রাত জাগা কিংবা একটানা দীর্ঘক্ষণ কাজ করলেও অনেক সময় মাথাব্যথা হয়। এমনকি অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও টেনশনের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে।

করণীয়

  • পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, যাতে শরীর পানিশূন্য না হয়। কোমল পানীয় পরিহার করে ডাবের পানি ও লেবু–পানি পান করা যেতে পারে।
  • বাইরে বেশি সময় রোদের সংস্পর্শে থাকা যাবে না। বাইরে বের হওয়ার দরকার হলে রোদচশমা, ছাতা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • এ সময় অবশ্যই অতিরিক্ত রঙিন ও আঁটসাঁট পোশাক পরিহার করে ঢিলেঢালা, সাদা ও সুতির আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে।
  • খাদ্যতালিকায় মৌসুমি ফল, সবজি ও পর্যাপ্ত প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
  • হঠাৎ তীব্র ব্যথা হলে অথবা সঙ্গে বমি বা জ্বর হলে, কথা স্পষ্ট না বলতে পারলে, অচেতন হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখা: ডা. ইসরাত জাবীন, সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ