গণপিটুনিতে জড়িত সকল ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দু’জন নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় নাগরিক কমিটির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে নাগরিক কমিটি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নীরব ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতেই পুরোনো ফ্যাসিবাদী কায়দায় নির্যাতন করে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর ও পরে থানায় পাঠানোর ঘটনা ঘটেছে। দুটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের অকার্যকর ও নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জবাবদিহি চায় নাগরিক কমিটি। তা না হলে অচিরেই গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি দেশের আপামর জনতার স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে রাজপথে সক্রিয় কর্মসূচি পালন করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও মব-ভায়োলেন্সের মতো সব ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ও উপাদানের শিগগিরই বিলোপ করতে হবে এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা করতে হবে। আমরা মনে করি, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং সকল অপরাধের বিচারের দায়িত্ব আদালতের। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে, তারা অপরাধ করছে এবং দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে আমরা মনে করি।’
দেশজুড়ে মব-লিঞ্চিং, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মাজার ও মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জানান দিচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। জাতীয় নাগরিক কমিটির ভাষ্য, ৫ আগস্টের পরও এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে, ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতন হলেও ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও ব্যবস্থা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতা এবং বিভিন্ন হামলার পরও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে এ ধরনের দলবদ্ধ হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।