খেরসনে চূড়ান্ত লড়াইয়ের আগে লুটপাট চালাচ্ছে রাশিয়া

রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনের খেরসন শহরের মূল্যবান অনেক জিনিস খোয়া যাচ্ছে। খেরসনে ইউক্রেন ও রুশ বাহিনীর বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আগে শহরটি থেকে অ্যাম্বুলেন্স, ট্রাক্টর এবং প্রাইভেটকার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খেরসনের জাদুঘর থেকে ভাস্কর্য চুরি যাওয়ার মতোও ঘটনা ঘটছে।

চূড়ান্ত লড়াইয়ের আগে রাশিয়ার সেনারা লুট করা মূল্যবান জিনিসপত্র দিনিপ্রো নদী পেরিয়ে খেরসন অঞ্চলের দিকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। আর বাসিন্দাদের সেচ্ছায় সরিয়ে নেওয়ার নামে জোরপূর্বক স্থানান্তরের অভিযোগ রয়েছে। তবে অনেকে খেরসন ছাড়তে চাচ্ছে না এখনই। ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রবেশের অপেক্ষায় আছেন অনেকে।

খেরসনে একটা চাপা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দুই পক্ষ লড়াইয়ের জন্য ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ করছে বলে কয়েকদিন ধরে এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দখলে নেওয়া খেরসনে ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

খেরসনে যুদ্ধ শুরুর আগে প্রায় ৩ লাখ মানুষ বসবাস করতেন। তবে এখন কতজন বাসিন্দা রয়ে গেছে তার প্রকৃত হিসেব নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে এখানে যারা রয়েছেন আত্মীয়দের মতে, শহরটির বেশির ভাগই এখন খালি হয়ে পড়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বড় ধরনের লড়াইয়ের আগেই ভৌতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে বলে জানান।

গত বৃহস্পতিবার খেরসনের নিও-ক্লাসিক্যাল আঞ্চলিক রাজ্য প্রশাসন ভবন থেকে রাশিয়ার পতাকা নামানো হয়। এ বিষয়টি দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো রুশ বাহিনী খেরসনের অনেক জায়গায় ছেড়ে যাচ্ছে। স্থানীয় ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা ধারণা করছেন, নতুন করে সংগঠিত করতে রুশ সেনারা খেরসনের উপকণ্ঠে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান তৈরি করেছে। একই সময়ে পার্শ্ববর্তী চেরনোবায়েভকা এবং স্টেপানোভকার চেকপয়েন্টগুলো ছেড়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছে। দখলে নেওয়া ভবনগুলো থেকে রুশ পতাকাও উধাও হয়ে যাচ্ছে। তবে এটি ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য বড় ধরনের ফাঁদ হতে পারে বলে ধারণা জেলেনস্কির প্রশাসনের।

ডিনিপার নদীর পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসন্ন সপ্তাহগুলোতে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করে গুরুত্বপূর্ণ খেরসন শহর।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে যদি খেরসনে রুশ সেনারা পিছু হটে তাহলে তা হবে পুতিনের জন্য একটি রাজনৈতিক অপমানজনক ঘটনা। কারণ ৩০ সেপ্টেম্বর বেশ ঘটা করে ইউক্রেনের দখলকৃত যে চারটি অঞ্চলকে পুতিন রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা করেছেন খেরসন সেগুলোর একটি। ওই সময় পুতিন বলেছিলেন, এই চারটি অঞ্চল চিরদিনের জন্য রাশিয়ার।