হবিগঞ্জে বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক আন্দোলন প্রভাব পড়েছে চা-বাগানে। শুধু তা-ই নয়, কিছু অসাধু লোক চা-বাগানের বিভিন্ন ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করায় কমেছে চা পাতার উৎপাদন। এ নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ, বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের প্রায় ১৫ হাজার ৭০৩.২৪ হেক্টর জমিতে ২৫টি ফ্যাক্টরিযুক্ত চা-বাগান রয়েছে। এছাড়া ফাঁড়িসহ প্রায় ৪১টি বাগানের প্রায় প্রতি হেক্টর জমিতে ২২০০-২৫০০ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়ে আসছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকার লস্করপুর ভ্যালি। এ ভ্যালির বাগানগুলোতে বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক আন্দোলনের কারণে চা পাতার উৎপাদন ৩০ লাখ কেজি কমে গেছে। ২০২২ সালে এ ভ্যালির ২৪টি বাগানে ১ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়েছে। ২০২১ সালে এই বাগানে চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৩২ লাখ ৫১১ কেজি। সে হিসেবে এ বছর ৩০ লাখ ৩৫ হাজার কেজি বা ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ উৎপাদন কমেছে।
২০২২ সালের শুরুর দিকে বাগানগুলো খরার কবলে পড়ে ও আগস্ট মাসে ছিল ২০ দিনের শ্রমিক অবরোধ। এছাড়া চায়ের গাছে আক্রমণ করে ‘রেড স্পাইডার’ ও ‘হেলোফিলিটস মশা’। এসব কারণে উৎপাদন কমে গেছে।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার মাসে বাগানে ৬০ শতাংশ চা পাতা উৎপাদন হয়। কিন্তু এ সময়ের ভেতরে শ্রমিকরা ২০ দিন কাজ না করায় ২০ শতাংশ চা পাতার উৎপাদন কমে যায়।
অন্যদিকে, খরা, রেড স্পাইডার ও হেলোফিলিটস মশার আক্রমণ এবং খরচ বাড়লেও নিলামে বাড়েনি চায়ের দাম। এসব কারণে গত বছর ২৪টি বাগানে ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ উৎপাদন কমে গেছে।
চুনারুঘাটের মতো নবীগঞ্জ, বাহুবল, মাধবপুর উপজেলার চা-বাগানগুলোতেও বৈরী আবহাওয়া ও শ্রমিক আন্দোলনের কারণে চা পাতার উৎপাদন কম হয়েছে।
চুনারুঘাটের চন্ডিছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক ও লস্করপুর ভ্যালির সভাপতি ইউসুফ হোসেন খান জানান, গত বছর শ্রমিক অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বৈরী আবহাওয়া ও নানা রোগের আক্রমণের ফলে চা শিল্প এখন খারাপ সময় অতিবাহিত করছে।