ক্রিমিয়া আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা: পুতিন

ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর রাশিয়ান হামলা এবং কৃষ্ণ সাগরের শস্য রপ্তানি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ক্রিমিয়ায় মস্কোর নৌবহরে ড্রোন হামলার প্রতিক্রিয়া বলে বর্ণনা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

পুতিন সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলি একই সামুদ্রিক করিডোর ব্যবহার করেছিল যেগুলি জাতিসংঘের মধ্যস্ততায় চুক্তির অধীনে শস্যবাহী জাহাজগুলো পরিবহণ করেছিল।

কিয়েভ হামলার দায় স্বীকার করেনি এবং সামরিক উদ্দেশ্যে শস্য কর্মসূচির নিরাপত্তা করিডোর ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘ বলেছে, শনিবার যখন ক্রিমিয়ায় রুশ জাহাজ আক্রমণ হয় তখন ব্ল্যাক সি রুট কোনো শস্যবাহী জাহাজ ছিলো না।

এদিকে, ২৪ ফেব্রুয়ারী ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের ২৫০ তম দিনে, রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র দেশজুড়ে আছড়ে পড়ে। কিয়েভের বিস্ফোরণগুলি আকাশে কালো ধোঁয়ায় ছেঁয়ে যায়।

ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ ফেসবুকে এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার বাহিনী সোমবার অন্তত ছয়টি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের অবকাঠামোতে গোলাবর্ষণ করেছে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল বলেছেন, সোমবার ইউক্রেনের ১০টি অঞ্চলে ১৮টি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যার বেশিরভাগই জ্বালানি অবকাঠামো।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকোকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সোমবার সকাল সাতটা থেকে রুশ বাহিনী থেমে থেমে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে শুরু করে। কিয়েভে বসবাসরত অন্তত সাড়ে তিন লাখ মানুষ এখন সম্পূর্ণ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, জলবিদ্যুৎ বাঁধসহ জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিদ্যুৎ, তাপ ও ​​পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ সিনহুবভ টেলিগ্রামে বলেছেন যে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ শহরের প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দাসহ হামলার পর প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে যে তারা ৫০টি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৪৪ গুলি করে ভূপাতিত করেছে। কিন্তু হামলার কারণে কিয়েভের ৮০ শতাংশ পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের পুলিশ জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত তিন সপ্তাহ ধরে, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইরানি তৈরি ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ ব্যবহার করে ইউক্রেনের বেসামরিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে আক্রমণ করেছে রাশিয়া।

সূত্র: রয়টার্স