কোরআন ছুঁইয়ে লক্ষ টাকায় ভোট কেনার প্রতিযোগিতা!

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়া উপজেলায় সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। ভোট কিনতে কোরআন শরীফ ছুইঁয়ে এক লক্ষ টাকা করে ভোট কেনার চেষ্টার অভিযোগ করছেন ভোটাররা। ৩নং ওয়ার্ডে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ, ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ৩নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৮৫ জন। প্রার্থীদের মাঝে ভোট কিনে বিজয়ী হওয়ার একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ভোটাররা জানিয়েছেন। ভোট কিনতে কোরআন শরীফ ছুইঁয়ে এক লক্ষ টাকাও দেয়ার খবর স্বীকার করেছেন ভোটাররা। এছাড়া টাকার সাথে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোট নেয়ারও গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

দেশব্যাপী জেলা পরিষদ নির্বাচন ১৭ অক্টোবর সোমবার। মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিসাবউর রহমান একক প্রার্থী হওয়া এ পদে আর নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু সদস্য পদে নির্বাচন শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে। ভোটারদের কদরও বেড়েছে সদস্য প্রার্থীদের কাছে। ভোটের ধর দাম নিয়েও চলছে ধর কষাকষি। এ নিয়ে জনমনে আলোচনা সমালোচনা চাউর হয়েছে ৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়া উপজেলায় একটি ভোটের দাম এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম হচ্ছে।

৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়া আসনে সদস্য পদে প্রতিদ করছেন ৫ জন প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য সেলিম আহমদ ও মাহবুবুর রহমান মান্না। এছাড়া কুলাউড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলার ইকবাল আহমদ শামীম, ভাটেরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম সিদ্দিকী নানু ও দৈনিক সমকালের কুলাউড়া প্রতিনিধি সাংবাদিক সৈয়দ আশফাক তানভীর।

এদিকে কুলাউড়া জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা নিয়ে সংরক্ষিত আসন ০১। এই আসনে লড়ছেন ৩ নারী প্রার্থী। তারা হলে বর্তমান সদস্য শিরীন আক্তার মুন্নি ও জোবেদা ইকবাল। তাদের সাথে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন রেহানা পারভীন। কুলাউড়ায় ১৮৫, জুড়ীতে ৮১ এবং বড়লেখা উপজেলায় ১৪৬ ভোট মিলিয়ে ৪১২ জন ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নারী প্রার্থীরা। ভোটারদের মধ্যে বর্তমান ২ সদস্যকে নিয়েই চলছে আলোচনা।

কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কাঠালতলী ও জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গিরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণ করা হবে।

মৌলভীবাজারের জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, টাকা দিয়ে ভোট কেনার কান কথা শুনে লাভ নেই। কোন প্রার্থী অবশ্য এ নিয়ে অভিযোগ করেনি। নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারের ব্যাপারে তিনি জানান, সামান্য ভোট। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিযুক্ত থাকবে। কোন গুজবে কান দিয়ে লাভ নেই। পুরো জেলায় ভোট ইভিএমে ভোট হবে।

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, ‘জেলা ৭টা কেন্দ্রে ২টি করে কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেই দুটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমার অফিসের মোবাইল থেকে তা মনিটরিং করা হবে। তাছাড়া একটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। সুতরাং এখানে সামান্যতম কিছুর সুযোগ থাকছে না।’