কুলাউড়ায় ১০ হেক্টর বনভূমিতে সামাজিক বনায়ন শুরু

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা হিল ফরেস্টে ১০ হেক্টর বনভূমিতে বনায়নের চারা রোপণে খাসিয়াদের বাধা ও আদালতে দায়ের করা মামলা খারিজ হওয়ায় অবশেষে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে শতাধিক শ্রমিক সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী নিয়ে বৃক্ষরোপণ শুরু করে বন বিভাগ। ২ মাস কাজ বন্ধ থাকার পর পুনরায় বনায়নে করতে পারায় উপকাভোগী সদস্যরাও খুশি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ভাটেরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আওতাধীন কালিয়ারআগা এলাকায় পতিত ১০ হেক্টর বনভূমিতে স্থানীয় এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে ২০২১-২২ অর্থ সনে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টির লক্ষ্যে গত নভেম্বর মাসে ২৫ হাজার চারা রোপণ করা হয়। এবং গত কয়েক মাসে বনায়নের নির্ধারিত স্থানে চারা রোপণের লক্ষ্যে জঙ্গল পরিষ্কারসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষে ২ মাস পূর্বে চারা রোপণ শুরু করে বন বিভাগ।

কিন্তু স্থানীয় খাসিয়া আদালতে বনায়নকৃত জায়গার মালিকানা দাবী করে রিট করলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। পরে বন বিভাগের পক্ষ আদালতে রিটের বিপক্ষে আপিল করলে আদালত খাসিয়াদের মামলা খারিজ করে বন বিভাগের পক্ষে রায় প্রদান করেন। ফলে বন বিভাগের সামাজিক বনায়নে আইনগত কোন বাঁধা না থাকায় শনিবার থেকে উপকারভোগী সদস্য ও বন বিভাগের লোকজন চারা রোপণ শুরু করেন।

বনায়নের উপকারভোগীরা জানান, কালিয়ারআগা এলাকায় পতিত ১০ হেক্টর বনভূমি কখনও খাসিয়াদের দখলে ছিল না। কোন ধরনের পান গাছ, লেবু গাছ ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দা খয়রুল আমিন চৌধুরী টিপুর দখলে ছিলো জায়গাটি। তিনি জায়গাটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে সেখানে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নেয় বিভাগ। খাসিয়ারা ইচ্ছাকৃতভাবে জবরদখলের উদ্দেশ্যে বন বিভাগের সামাজিক বনায়নে বাঁধা প্রদান করে।

বনায়ন বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় সরকারের কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। ২৫ হাজার চারার মধ্যে অর্ধেক চারা সময়মতো রোপণ করতে না পারায় মরে নষ্ট হয়। তাছাড়া সামাজিক বনায়নে গাছ লাগানোর নির্ধারিত সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। এরপরেও আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে বনায়ন করতে পারায় খুশি উপকারভোগীরা।

এ ব্যাপারে কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন জানান, ভাটেরা হিল ফরেস্টের কালিয়ারআগা বনভূমিতে বনায়ন করতে গেলে খাসিয়ারা বাধা দেয় এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বত্ব মামলা ( নং ১৮৫/২০২২) দায়ের করে।

আদালত থেকে স্থিতাবস্থা থাকায় ২ মাস কাজ বন্ধ থাকে। বন বিভাগ মামলার জবাব ও আপত্তি দাখিল করে। গত ১০ আগস্ট বিজ্ঞ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি গ্রহণ করে খাসিয়াদের মামলাটি না মঞ্জুর করেন।