কুলাউড়ায় বিদ্যুৎ গ্রাহকের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় পল্লী বিদ্যুতের দুই কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন গ্রাহক লুৎফুল হায়দার। এর জেরে অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কুলাউড়ার সাব-জোনাল অফিসের এজিএম নাজমুল হক তারেক ও বরমচাল অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন লুৎফুল হায়দারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই ‘হয়রানিমূলক’ মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় কুলাউড়া স্টেশন চৌমুহনীতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ভুক্তভোগী গ্রাহক আজিজুল হায়দারের পরিচালনায় একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম শামীম, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের সদস্য ছয়ফুল ইসলাম, সমাজকর্মী নাজমুল ইসলাম প্রমুখ। কর্মসূচিতে নারীসহ প্রায় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও ২০ দিন ধরে গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে উল্টো সেই গ্রাহককে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে গ্রাহক লুৎফুর হায়দারকে মুক্তি প্রদান ও মামলা প্রত্যাহার করে সংযোগ পুনঃস্থাপন করতে হবে। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

ভুক্তভোগী গ্রাহক আজিজুল হায়দার বলেন, আমার মা একজন ডায়বেটিস, হার্ট ও প্রেসারের রোগী। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও ২০ দিন ধরে আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন না করায় আমার অসুস্থ মা মাহমুদা খানম অতি গরমে কষ্টের মধ্যে আছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় আমার মায়ের পায়ের হাড় ও কোমরের হাড় ক্ষয়ের জন্য থেরাপি এবং শ্বাসকষ্টের জন্য নেবুলাইজার (গ্যাস) দিতে পারছি না। আমরা দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের দাবি জানাচ্ছি।

জানা গেছে, এক মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সত্ত্বেও পল্লী বিদ্যুৎ বরমচাল অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন তার লোকজনকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা গ্রাহক লুৎফুর হায়দারের বসতবাড়ির বিদ্যুৎ লাইন গত ২৮ আগস্ট বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে এজিএম নাজমুল হক ও ইনচার্জ জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ১২ দিন পর গ্রাহক লুৎফুর হায়দারকে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কুলাউড়ার সাব-জোনাল অফিসের এজিএম এম নাজমুল হক তারেক বলেন, ওই গ্রাহক পুনঃসংযোগের কোনো আবেদন করেননি। আবেদন করলে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।