কুলাউড়ায় রাজনগরের ফল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা!

ছবি : প্রতীকী

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার জয়চন্ডী ইউনিয়নে ব্যবসায়িক লেনদেনের জেরে এক ফল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ওই ফল ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়া (৫৫) রাজনগর উপজেলার টেংরা বাজারের ফল বিক্রেতা।

সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পূর্ব রঙ্গীরকুলের নোয়াবাগিচা রাবার বাগানের পাশে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। নিহত জয়নাল রাজনগর ইউনিয়নের দত্তগ্রামের বাসিন্দা মুন্সি আরজদ মিয়ার ছেলে।

এদিকে স্থানীয় এক ব্যক্তির ফেসবুক লাইভে আহতবস্থায় জয়নাল মুসা নামে একজনের নাম বলেন। সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মুসা জয়চন্ডী ইউনিয়নের পাঁচপীর জালাই এলাকার মৃত শামসুল ইসলামের ছেলে।

জানা যায়, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে জয়নাল মিয়া তাঁর বড় ছেলে মাছুমকে তার ফলের দোকানে বসিয়ে রেখে কুলাউড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে কুলাউড়া জয়চন্ডীর পূর্ব রঙ্গীরকুল এলাকার নোয়াবাগিচা রাবার বাগানের বাংলো ঘরে থাকা লোকজন হঠাৎ করে জয়নালের চিৎকার শুনতে পান। জয়নাল রক্তাক্ত অবস্থায় বাংলো ঘরে ঢুকেন। এসময় ঘরে থাকা বাগান কর্মকর্তা হামিদুল হাসানসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে জয়নাল বলেন, তার সাথে থাকা মুসাসহ দুজন লোক কুপিয়ে তাকে জখম করেছে।

পরে স্থানীয়রা জয়নালকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

বাগান কর্মকর্তা হামিদুল হাসান জানান, ‘সন্ধ্যার দিকে আমরা কয়েকজন বাগানের বাংলো ঘরে ছিলাম। হঠাৎ একজন লোকের চিৎকার শুনে দরজা খুলে রক্তাক্ত অবস্থায় জয়নালকে দেখি। ঘরে গিয়ে জয়নাল জানান জয়চন্ডীর মুসাসহ আরেক ব্যক্তি তাঁর (জয়নালের) সাথে ছিলেন। তখন আমাদের সাথে থাকা বাউল সরওয়ার তাঁর ফেসবুক আইডিতে একটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করেন। সেখানে মুসার কথা স্বীকার করেন জয়নাল। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় জয়নালের।’

নিহতের ছেলে মাছুম মিয়া হাসপাতাল থেকে বলেন, ‘আমার বাবা বিকেলে রাজনগরের টেংরা বাজারে আমাকে দোকানে বসিয়ে রেখে কুলাউড়ায় যান। রাত ৮টার দিকে ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো। মুসা আমাদের গ্রামের মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেজন্য আমার বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক হয় মুসার। মুসার সাথে আমার বাবার ব্যবসায়িক লেনদেন ছিলো।’

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান বলেন, নিহতের পেটের বাম দিকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাসপাতালে আসার পূর্বেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে জয়নালের মৃত্যু হয়।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুছ ছালেক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। জড়িতদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনের কারণে জয়নালকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।