কুলাউড়ায় মনু নদীতে ‘মাছ ধরা’ শুরু, উৎসবের আমেজ!

মৌলভাবাজারের কুলাউড়ায় মনু নদীতে আজ সোমবার থেকে ৩ দিনব্যাপী মাছ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে। যে উৎসব শেষ হবে ৯ নভেম্বর।

প্রথম দিন সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে হইহুল্লোড় করে জাল নিয়ে নদীতে নেমে মাছ শিকার শুরু করেন। নদীর বিভিন্ন বাঁকে স্থানীয় ভাষায় ‘ডহর’ রয়েছে, সেসব স্থানে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় লোকজন এ মাছ ধরাকে ‘মাছ হাট উৎসব’ বলেও অ্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌখিন ও পেশাদার মাছ শিকারিরা জড়ো হয়েছেন মনু নদীতে মাছ ধরতে। সৌখিন এসকল মাছ শিকারীদের জালে ধরা পড়ছে নানা প্রজাতির ছোট বড় মাছ। মাছ শিকারীর পাশাপাশি হাট উৎসব দেখতে, মাছ ক্রয় করতে আসেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। যার ফলে তিন দিন ওই এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।

উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের মনু নদীর মাহতাবপুর থেকে সোমবার থেকে মাছধরা শুরু হয়েছে। মনু নদীর পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বেলেরতল নামক স্থান পর্যন্ত মাছ শিকার চলবে।

সরেজমিন দেখা যায়, হাজারো সৌখিন ও পেশাদার শিকারী একসাথে আনন্দ করে পলো, কুচা, ঝাকি জাল, প্লেন জাল, টানা জাল নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে নামেন। কেউ নৌকা করে, কেউ কলাগাছের ভেলায় চড়ে, কেউ বা নদীতে নেমে মাছ ধরেন। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সবাই আনন্দে মেতে উঠে মাছ শিকার নিয়ে। এদৃশ্য দেখতে দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে জড়ো হন। কেহ আসেন মাছ শিকার দেখতে, কেহ বা আসেন মাছ বিক্রি হলে ক্রয় করতে।

প্রথম দিন মনু রেল সেতুর পূর্ব স্থান থেকে শুরু হয় মাছ ধরা। জালে বিভিন্ন ধরণের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আইড়, ঘাগট, বোয়াল, রুই, কালো বাউশ, বাছা, লাড়িয়া, বাশপাতা সহ নানাজাতের দেশীয় মাছ। সৌখিন মাছ শিকারী ছাড়া অন্য অনেকেই মাছ শিকার করে নিজের চাহিদার অতিরিক্তটা সেখানে বিক্রি করে থাকেন।

প্রতি বছর কুলাউড়ায় মনু নদে এ উৎসবটি পালন করা হয়। ভারতের কাছাকাছি জায়গার ডহরগুলোতে মাছ ধরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ উৎসব। এখানকার বিভিন্ন বাড়িতে আত্মীয়স্বজন এসে জড়ো হন মাছ শিকার দেখতে। মূলত শীতের শুরুতে মনু নদীতে মাছ ধরা উৎসব হয়ে থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার লোকজন এসে মাছ ধরায় অংশ নেন।

হাজিপুরের বাসিন্দা আলম সাইফুল জানান, মনু নদীর মাছ সুস্বাদু ও সতেজ থাকায় মানুষের আকর্ষণ বেশি থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির সতেজ মাছ একসাথে পেয়ে ক্রেতারা খুশি হন অন্যদিকে ভালো দামে মাছ বিক্রি করে বিক্রেতারাও লাভবান হন।

হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওদুদ বখস জানান, এই উৎসব প্রতি বছর হয়ে থাকে। মনু তীরের হাজীপুর, টিলাগাঁও এবং পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মানুষ এসময় মাছ শিকারের অপেক্ষায় থাকে।