কী করবেন হিটস্ট্রোকের লক্ষণ বুঝলে

ইদানীং দেশের কোনো না কোনো স্থানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি স্পর্শ করছে বা পার হচ্ছে। রোদে বেরোলেই গা জ্বালা করছে। ছায়ায় বসে থেকেও আরাম নেই।

কারণ, বাতাসও গরম। বারবার তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের এ সময় ঝুঁকি বেশি। এই তীব্র দাবদাহে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হতে পারে হিটস্ট্রোক। শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে বলে হিটস্ট্রোক।

আমাদের মস্তিষ্কের তাপ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রের নির্দেশে রক্তের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় শরীরের তাপমাত্রা। কোনো কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ত্বকের রক্তনালি প্রসারিত হয়ে অতিরিক্ত তাপ পরিবেশে ছড়িয়ে দেয়। ঘামের মাধ্যমেও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র পরিবেশে বেশি সময় থাকলে বা পরিশ্রম করলে শরীরের স্বাভাবিক তাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অকেজো হয়ে পড়ে। এতে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়, দেখা দেয় হিটস্ট্রোক।

অচেতন হয়ে যাওয়া এই সমস্যার শেষ ধাপ। তবে হিটস্ট্রোক হওয়ার আগেই কিছু লক্ষণ ফুটে ওঠে। লক্ষণগুলো দেখে তখন তখনই সতর্ক হতে হবে। হিটস্ট্রোক হওয়ার আগে শরীরের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে, গা ঝিমঝিম করে এবং প্রচণ্ড পিপাসা পায়। পরের ধাপে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম ভাব, বমিভাব, অসংলগ্ন আচরণ, মাথা ঘোরার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এই দুই ক্ষেত্রেই কিন্তু শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকে এবং শরীর খুব ঘামতে থাকে।

এই সময় সচেতন হলে হিটস্ট্রোকের চূড়ান্ত অবস্থা এড়ানো সম্ভব। এ সময় অবহেলা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো যায়। এমনটা বোধ হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত রোদ থেকে এনে অপেক্ষাকৃত শীতল স্থানে রাখতে হবে। ফ্যান ছেড়ে জামাকাপড় আলগা করে দিতে হবে। শরীর পানি ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। একটু একটু করে মুখে পানি বা স্যালাইন খাওয়াতে হবে। বিশ্রামে রাখতে হবে।