কাশ্মীরে অত্যাচার চালাচ্ছে ভারতীয় সেনারা, জাতিসংঘে অভিযোগ

ফের কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পুরনো অবস্থানে ফিরল পাকিস্তান। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ সভায় বক্তৃতায় শুক্রবার কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর কথা তুলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। কাশ্মীরের উপরে ভারতের বেআইনি ও একতরফা জবরদখলের কারণেই দুই দেশের মধ্যে শান্তি নষ্ট হয়েছে। পাকিস্তানের এখন স্থিতিশীল অর্থনীতির প্রয়োজন। এরজন্য ভারত সহ সমস্ত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই শান্তি বজায় রাখতে চায়।

শাহবাজ শরিফ শুক্রবার ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সরব হলেন জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের আগস্টের অবৈধ পদক্ষেপ প্রত্যাহার করে শান্তি এবং আলোচনার রাস্তায় ফেরা উচিত ভারতের। সেই সঙ্গে তার অভিযোগ, কাশ্মীর উপত্যকার জনবিন্যাস বদলের পরিকল্পনা করছে নয়াদিল্লি।

জাতিসংঘ মঞ্চে শাহবাজ অভিযোগ করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা ধারাবাহিক ভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সেখানকার জনবিন্যাসের চরিত্র বদলের চেষ্টা চলছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরকে হিন্দুগরিষ্ঠ কাশ্মীরে পরিণত করতে চাইছে ভারত।

তিনি বলেন, ভারত কাশ্মিরিদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যা ক্রমাগত ত্বরান্বিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, কারাভোগ, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, নির্বিচারে বল প্রয়োগ, ইচ্ছাকৃতভাবে কাশ্মিরি যুবকদের পেলেট গান দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা এবং পুরো সম্প্রদায়কে গণশাস্তি দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে কাশ্মিরিদের ওপর নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।

শাহবাজ শরিফ আরও অভিযোগ করেন, ভারতে ২০ কোটি মুসলমানের বিরুদ্ধে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। যেখানে মুসলিমরা বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি, হিজাব নিষিদ্ধ, মসজিদে হামলার শিকার হচ্ছে। এছাড়াও ভারতের কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠী সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ আহ্বান জানিয়েছে, যা ইসলামোফোবিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট রূপ।

এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই ভারতের তরফে তীব্র সমালোচনা করা হয়। জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধি মিজিটো ভিনিটো বলেন, যে দেশ শান্তি চায়, তারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দেবে না।একইসঙ্গে আন্ত-সীমান্ত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ করা হয়।

মিজিটো ভিনিটো বলেন, এটা সত্যিই দুঃখজনক যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই মঞ্চকে বেছে নিয়েছেন ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার জন্য। নিজের দেশের অপকর্মকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য এবং গোটা বিশ্ব যাকে অনৈতিক বলে অ্যাখ্য়া দিয়েছে, সেই কার্যকলাপকে নৈতিক বলে প্রমাণের চেষ্টায় পাকিস্তান এই কাজ করছে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার