কানাইঘাটে শতাধিক পাঠ্যবই আটক, তদন্ত কমিটি গঠন

সিলেটের কানাইঘাটে ২০২২ সালের সপ্তম ও নবম শ্রেণির বেশ কিছু বই এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীর কর্মচারীর কাছ থেকে আটক করা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে।

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি জনতার হাতে বই আটকের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) গোপাল চন্দ্র সূত্রধর ও থানার এসআই পিযুষ চন্দ্র সিংহকে নিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির সদস্যদের দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি।

জানা যায়, গত বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে উপজেলা প্রাণীসম্পদ হাসপাতালের পাশ থেকে একটি ভ্যানগাড়িতে থাকা কয়েকশ বইসহ পৌর শহরের ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী হাফিজকে আটক করেন স্থানীয় জনতা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ভ্যানগাড়িতে ছিল ২০২২ সালের সপ্তম ও নবম শ্রেণির শতাধিক বই।

বই আটকের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামকে জানানোর পর দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। কোথা থেকে এসব বই কিনে এনেছেন জানতে চাইলে আটক কর্মচারী জানান তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এসব বই কেজি দরে কিনেছেন। বই ভ্যানগাড়িতে তুলে দেন এবং বিক্রি করেন লিটন দাস নামে এক যুবক।

বই আটকের সংবাদ পেয়ে উপজেলা শ্রমিকলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন। তারা বই বিক্রির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

পরে রাত ১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জির নির্দেশে আটককৃত বই ও ভ্যানগাড়ি থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয় । তিনি তাৎক্ষণিক বই আটকের বিষয়টি পুলিশকে তদন্ত করে দেখার জন্য নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ২০২২ সালের পুরাতন আটককৃত এসব বই ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী কার কাছ থেকে কিনেছেন এবং বইগুলো কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে তা কঠোরভাবে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০২৩ সালের নতুন বই আটক হয়নি। প্রত্যেকটি স্কুল ও মাদ্রাসায় নতুন পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে। আর যেখানে আমাদের পাঠ্যবইগুলো রাখা হয়, সেখান থেকে বই অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি বলেন, ২০২৩ সালের নতুন কোনো পাঠ্যবই বিক্রি হয়নি। একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী ২০২২ সালের পুরাতন কিছু বই কার কাছ থেকে কিনেছেন এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।