কানাইঘাটে মাদ্রাসা কমিটির বিরুদ্ধে মামলা, জনমনে ক্ষোভ

কানাইঘাট উপজেলার ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের প্রাচীনতম দ্বীনি প্রতিষ্ঠান গর্দ্দনাকান্দি দারুল কোরআন হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে সুনাম ক্ষুন্ন করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় আমরপুর গ্রামের মৃত হাছন রাজার পুত্র আলা উদ্দিন সম্প্রতি সিলেটের আমলী আদালতে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে গর্দ্দনাকান্দি, দ্বিগড় নয়ামাটি, মিরারচটি আংশিক ও ভাটরকোনা গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কারণ এসব গ্রামের লোকজন মাদ্রাসায় চাঁদা দিয়ে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করে থাকেন।

গত শুক্রবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ম্যানেজিং কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত সদস্যরা ৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এ হাফিজিয়া মাদ্রাসার বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে সবাইকে এলাকার শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান। সেই সাথে মামলার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেন।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৬৭সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রথমে আমরপুর গর্দনাকান্দি হাফিজিয়া মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়। আনুমানিক ২৫ বছর পূর্বে আমরপুর গ্রামের লোকজন সেচ্ছায় মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে গিয়ে আমরপুর দারুস সালাম ক্বওমী মাদ্রাসা নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। আমরপুর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে স্থানীয় লোকজন বসে আমরপুর গর্দ্দনাকান্দি ফুরকানিয়া মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করে শুধুমাত্র গর্দ্দনাকান্দি দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার নাম রেখে মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম, হিসাব-নিকাশ, আয়-ব্যায়ের পরিচালনা করে আসছেন।

এমনকি প্রতিবছর এ নামে মাদ্রাসার বার্ষিক জলসা হচ্ছে এবং এলাকাবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহসহ সাহায্য সহযোগিতা নেয়া হয়ে থাকে।

মাদ্রাসার সেক্রেটারী মাওলানা শিহাব উদ্দিন জানান, গর্দ্দনাকান্দি দারুল কোরআন হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও আমরপুর দারুস সালাম ক্বওমী মাদ্রাসা এলাকাবাসীর সাহায্য সহযোগিতায় চলে আসছে। এ নিয়ে এলাকায় কোন ধরনের বিরোধ নেই। কিন্তু হঠাৎ করে আমরপুর গ্রামের কিছু লোকজন এলাকার পরিবেশ নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। তারা গর্দ্দনাকান্দি দারুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এবং মাদ্রাসার উন্নয়নমূরক কর্মকান্ড ব্যাহত করার জন্য বিভিন্ন সাজানো অভিযোগ তুলে আমিসহ মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তিনি মামলার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে মাদ্রাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় অনেকে জানিয়েছেন, গর্দ্দনাকান্দি হাফিজিয়া মাদ্রাসা এলাকার একটি প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এ মাদ্রাসায় শুধুমাত্র হিফজ্ বিভাগের শিক্ষার্থীরা কোরআন অধ্যয়ন করে থাকেন। বর্তমানে অর্ধশতাধিক কোরআনে হাফিজ অধ্যয়নরত আছেন। মাদ্রাসার ছাত্রাবাস রয়েছে, দরিদ্র শিক্ষার্থীরা কোরআন অধ্যয়নসহ তাদের যাবতীয় থাকা-খাওয়ার খরচ সবার সাহায্য সহযোগিতায় চলে আসছে।