সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন্ত ব্যানার্জির মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে বদলিজনিত বিদায় উপলক্ষে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৫টায় ঐতিহ্যবাহী কানাইঘাট প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী।
প্রেসক্লাব সভাপতি নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সহ সাধারণ সম্পাদক মুমিন রশিদ ও কোষাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত বিদায়ী অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘কানাইঘাটে দুই বছর দশ মাসের অধিক সময় সরকারি দায়িত্বপালনকালে বিশেষ করে কানাইঘাট প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক মহল, সুধীজনসহ সবার সহযোগিতা পেয়েছিলাম বিধায় সরকারের নির্বাহী আদেশ পালনের পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিতসহ প্রশাসনিক সকল সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্বপালন করেছি। সরকারি নির্বাহী আদেশ পালন করতে গিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারও ক্ষতি করার চেষ্টা করিনি।’
তিনি বলেন, ‘আইন মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করাও সম্ভব নয়। সরকারের সকল কর্মকান্ড বাস্তবায়নে কানাইঘাট প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ আমাকে যে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন তা আমি সব-সময় মনে রাখব এবং ক্লাবের উন্নয়নে তার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে কারও মনে কোনো ধরণের কষ্ট দিয়ে থাকলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কানাইঘাটের মানুষজন অত্যন্ত ভালো। আপনাদের কথা সবসময় আমার মনে থাকবে। আমিও আপনাদের জন্য কাজ করার চেষ্টা করেছি। কানাইঘাটে কর্মরত থাকা অবস্থায় সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে নিরলস ভাবে কাজ করেছি। প্রতিটি কাজে সাংবাদিকরা সাংবাদিকরা সহযোগিতা করেছেন। যেখানে যাচ্ছি সেখানে কানাইঘাটের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ থাকলে আপনাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করব।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী বলেন, বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি একজন সৎ, নিষ্ঠাবান, দক্ষ, সাহসী, সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। সরকারি আদেশ পালন করতে গিয়ে তিনি দিনরাত মানুষের জন্য কাজ করেছেন। কানাইঘাটের মানুষ তাকে সবসময় স্মরণে রাখবে। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তার ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা প্রদান করায় ক্লাব নেতৃবৃন্দের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদায়ী ইউএনও সুমন্ত ব্যানার্জি একজন সাংবাদিক বান্ধব কর্মকর্তা ছিলেন। প্রতিটি কাজে সাংবাদিকদের তিনি সর্বাত্মক ভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং সরকারি ভাবে অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে প্রেসক্লাবের উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন তা সব-সময় সাংবাদিকরা মনে রাখবেন। বর্তমান কর্মস্থল মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রাণলয়ে যোগদানের মাধ্যমে দেশের জন্য আরো ভালো কাজ করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রশিদ। বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক এম.এ হান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা জামাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম হারুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ও কানাইঘাট সড়কের বাজার আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সভাপতি এম. তাজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাস্টার মামুন আহমদ, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাস্টার মহি উদ্দিন, সাতবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তায়্যিব শামীম, দিঘীরপাড় পূর্ব ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল, বড়চতুল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসেন, ক্লাবের সহ সভাপতি আব্দুন নুর, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এনামুল হক।
উপস্থিত ছিলেন, পৌর কাউন্সিলর জাকির হোসেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ভজন লাল দাস, মানবিক টিম কানাইঘাটের প্রধান পৃষ্ঠপোষক দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী সংবাদকর্মী মাহবুব আব্দুল্লাহ, সমাজকর্মী হোসাইন আহমদ, কামরুজ্জামান, জেলা কৃষকলীগের সদস্য নজরুল ইসলাম বেলাল সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআনে পাঠ থেকে তেলাওয়াত করেন ক্লাবের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাও. আসআদ আহমদ, পবিত্র গীতা পাঠ করেন ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সুজন চন্দ অনুপ।
প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের উপস্থিত ছিলেন, ক্লাবের সহ সভাপতি শাহিন আহমদ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পাঠাগার সম্পাদক জয়নাল আজাদ, সহযোগী সদস্য মুফিজুর রহমান নাহিদ।
অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জিকে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন ক্লাব নেতৃবৃন্দ।