‘বঙ্গবন্ধু ব্রি ধান ১০০’ চাষে বাম্পার ফলনে লাভের আশা করছেন কমলগঞ্জের কৃষক সৈয়দ নাজমুল হাসান মিঠু। তিনি গত বছর কৃষি অফিস থেকে বীজ নিয়ে বোরো মৌসুমে উপজেলায় ছাইয়াখালি হাওর এলাকায় প্রথমবারের মতো প্রায় এক একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ ধান’ চাষ করেন।
অভাবনীয় ফলন হওয়ায় এবছর প্রায় দশ একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু ব্রি ধান ১০০’ এর চারা রোপণ করেন। সঠিক পরিচর্যা, রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে।
কৃষক নাজমুল হাসান মিঠু বলেন, বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান চাষে সময় কম লাগে, খরচ হয় কম এবং ফলন হয় ভালো। ‘বঙ্গবন্ধু ব্রি ১০০ ধান’ ১৩৫ থেকে ১৪০ দিনের মধ্যে এক একর জমিতে ১শত বিশ থেকে পঁচিশ মণ ধান উৎপাদন সম্ভব বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘জিংকসমৃদ্ধ এ ধানের চালের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো হওয়ায় অনেক কৃষক আমার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে এবছর বোরো চাষ করেছেন। এছাড়া কৃষি অফিসও আমার থেকে বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেন।’
তিনি আরও জানান, বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান চাষ করলে জমিতে বছরে তিন ফসলই চাষ করা সম্ভব। ধানের ন্যায্য মূল্য পেলে খরছ বাদে লাভের আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ‘বঙ্গবন্ধু ব্রি ধান-১০০’ বোরো মৌসুমের একটা জাত। এই জাতটি বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বর্ষে বঙ্গবন্ধু-১০০ নামে কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ করা হয়। এই ধানের চাল মাঝারি চিকন ও সাদা। এতে প্রতি কেজিতে জিংকের পরিমাণ রয়েছে ২৫.৭ মিলিগ্রাম, যা জিংকের অভাব পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতি.দ্বা) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ধান-১০০’ বোরো মৌসুমের একটি জাত। এতে আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট বিদ্যমান। জিংক সমৃদ্ধ এ ধানের গুনগতমান ভালো থাকায় রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম হয় এবং কম সময়ে ফলন হয় বেশি। গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে কৃষক নাজমুল হাসান মিঠুকে কৃষি অফিস থেকে বীজ সরবরাহ করা হয়।
তিনি বলেন, কৃষি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে থেকে সব রকম পরামর্শ প্রদান করায় ভালো ফলন হয়। এ মৌসুমে তিনি প্রায় দশ একর জমিতে এ ধান চাষ করেন এবং আশানুরুপ ফলন হয়েছে। আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।