মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় লোডশেডিংয়ের কারণে সিএনজি (গ্যাস) অভাবে জ্বালানি সংকটে পড়েছে কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা। আর এ কারণে গত তিনদিন ধরে বেকার হতে বসেছে এসব সিএনজি অটোরিকশা চালক।
ফলে আর্থিক সংকটের শিকার হচ্ছে অটোচালকের পরিবার। চালক ছাড়াও ক্ষতির সম্মুখে পড়েছে অটোরিকশার মালিকেরা ও দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় লোডশেডিং, জেনারেটর ও সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৫টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ রয়েছে। ফলে যে কয়টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রয়েছে এসব স্টেশনে অতিরিক্ত গাড়ি ও ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস পাচ্ছে না বেশিরভাগ অটোরিকশা। ফলে এসব গাড়ি বাধ্য হয়ে বন্ধ রাখতে হচ্ছে চালকদের। এছাড়া উপজেলার সড়কগুলোতে অটোরিকশাগুলো গ্যাস সংকটের অজুহাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নেওয়ার জন্য অটোরিকশার প্রায় এক কিলোমিটারের দীর্ঘ দুটি লাইন হয়েছে। জেলার ৫টি গ্যাস স্টেশন বন্ধ থাকার কারনে বিভিন্ন উপজেলা থেকে গ্যাস নেওয়ার জন্য এসব লাইনে দীর্ঘ কয়েকঘন্টা ধরে অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন চালকেরা। এছাড়া বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্যাস স্টেশন কয়েকঘন্টা বন্ধ রাখা হয়। ফলে উপজেলার ভানুগাছ, আদমপুর, শমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও শহীদনগর বাজারের প্রায় ৫ শতাধিক অটোরিকশা গ্যাস সরবরাহ করতে না পারায় বন্ধ রয়েছে।
গ্যাস নিতে আসা কয়েকজন অটোরিকশা চালক রমুজ আলী, শরফান মিয়া, মালিক মিয়া জানান, তাদের মধ্যে অনেকে রাত তিন টার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল সাতটার সময় গ্যাস পেয়েছেন। আবার কেউ দীর্ঘ তিন ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর শুনেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তাঁরা।
গ্যাস স্টেশন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশা চালক সুহেল মিয়া, রমেশ পাল বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) আমার গাড়ি বন্ধ ছিল। আজ (রোববার) সকাল সাতটার সময় গ্যাস নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু প্রায় চার ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর হঠাৎ করে গ্যাস স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস না পেলে গাড়ি কিভাবে চালাবো আর পরিবারের জন্য কি নিয়ে যাবো জানি না।’
বিশেষ করে উপজেলার অটোরিকশাগুলো, মৌলভীবাজার জেলা শহরের কয়েকটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করে। কিন্তু বিদ্যুৎ লোডশেডিং, জেনারটর সমস্যা ও সরকারি নির্দেশনা না মানায় ৫টি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হওয়ার কারণে অটোরিকশাগুলো কোনোভাবেই কোনো ধরনের জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারছে না। এতে অটোরিকশার চালক, মালিক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কমলগঞ্জের শমশেরনগরের উত্তর বাজার অটোরিকশা স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘গ্যাস সংকটে আমাদের স্ট্যান্ডের প্রায় ২০০ গাড়ি বন্ধ হয়ে গেছে। গত দুই দিনের চেয়ে আজ সবচেয়ে বেশি গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা চালকরা অনাহারে থাকতে হবে। সিএনজি ফিলিং স্টেশন গুলোর সমস্যা সমাধান করে তাড়াতাড়ি গ্যাস স্টেশন খুলে দেওয়া হোক।’