কমলগঞ্জে গরম চরমে, বাড়ছে নানা রোগ

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় কয়েকদিনের টানা ভ্যাপসা গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। তপ্ত আবহাওয়ার কারণে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিশু ও বয়স্ক মানুষজন। তাপদাহের কারণে কৃষকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পারছেন না। ফলে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রা।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৩টায় উপজেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রা আরও ২/৩ দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারবেশন অফিসার আনিসুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা বুধবার ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা আরও ২/৩ দিন অব্যাহত থাকবে।

আষাঢ় মাসে চলছে এমন তাপদাহ। ভরা বর্ষা মৌসুমের মধ্যভাগে এসেও চৈত্র-বৈশাখের মতো ভ্যাপসা গরমে নাকাল কমলগঞ্জের মানুষ। গত কয়েকদিন ধরে দিন রাত-সমান তালে চলছে গরমের দাপট। তবে সন্ধ্যার পর হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। অস্বাভাবিক দাবদাহের কারণে অধিকাংশ ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে বাড়ছে রোগীর ভিড়। ফার্মেসিগুলোতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক লোকজন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। হঠাৎ করে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় লোকজন পড়েছেন মহা দুশ্চিন্তায়।

জানা গেছে, নানা রোগে আক্রান্ত লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে সেবন করছেন।

এমন অবস্থায় দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া লোকজন পড়েছেন বেকায়দায়। তারা কোনো কাজ-কর্ম করতে পারছেন না ঠিকমতো।

রিকশাচালক মোমিন মিয়া বলেন, গরমের তাপে বাড়িতে থাকা যাচ্ছে না। রিকশা চালাতেও যেতে পারছি না। কিছু সময় রিকশা চালাই, আবার কিছু সময় বসে থাকি। কাজ না করলে তো সংসার চলবে না।

কৃষক আজাদুর রহমান বলেন, জমিতে আগাছা জমেছে। গরমের কারণে জমির আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে পারছি না। জানি না সময়মতো আগাছা পরিষ্কার করতে না পারার কারণে ফসল বিনষ্ট হয় কি না।

দিনমজুর হরমুজ মিয়া বলেন, গরম হলে কি হবে, পেটে তো ভাত দিতে হবে। তাই গরমের মধ্যেও কাজ করতে হচ্ছে।

কমলগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, বেশ কিছু শিশু ও বয়স্ক মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। গরম কমে গেলে রোগ এমনিতেই হ্রাস পাবে।