মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কালবৈশাখী তাণ্ডবে উপজেলার পতনউষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরো বেশ কিছু বাড়িঘর। এমন সংকটে খোলা আকাশের নিচে অর্ধশতাধিক পরিবার দিনযাপন করছে। এছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়েছে।
শুক্রবার(২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টিও হয়। মধ্যরাত থেকে প্রায় সাড়ে ১৫ ঘন্টা পর শনিবার বিকাল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়। এতে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনায় পড়েছেন কয়েক হাজার গ্রাহক।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার, ধূপাটিলা, উসমানগড়, ব্রাহ্মণঊষারসহ ৮টি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইরদেউল গ্রামে আরো কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ, বাঁশ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
পতনঊষার ইউনিয়নের নেছার মিয়া, ময়নুল মিয়া, খুশবা বেগম, লিপি বেগম, রহমান মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, কালাম মিয়া, আনু মিয়া, ফখরুল মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে তীব্র শিলা বৃষ্টি হলে মূহুর্তের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। এখন আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। আমাদের সহোযোগিতা না করলে আমরা রাস্তায় থাকতে হবে।
পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান জানান, আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে পতনঊষার গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেসব দরিদ্র পরিবারের জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খাঁন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন। বিষয়টি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িঘর বিধ্বস্তের কথা বলেছেন। তবে পরিপূর্ণ হিসাব জানা যায়নি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দেওয়ার জন্য। দ্রুত সময়ে তাদেরকে সহোযোগিতা করা হবে।