কমলগঞ্জে উৎসবের আমেজ, প্রস্তুত হচ্ছে ১৬০টি পূজামণ্ডপ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা এ বছর সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলে সর্বমোট ১৬০টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে। এ উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এখন মণ্ডপ তৈরি ও প্রতিমার রঙের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কমলগঞ্জের প্রতিমাশিল্পীরা।

আগামী শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ১৪৩টি সার্বজনীন পূজামণ্ডপের অনুকূলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি করে জিআর এর চালের ডিও বিতরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে মোট ১৬০টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। কমলগঞ্জ পৌর এলাকায় ৮টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া রহিমপুর ইউনিয়নে ২০টি মণ্ডপে, পতনঊষার ইউনিয়নে ১৪টি মণ্ডপে, মুন্সিবাজার ইউনিয়নে ১৬টি মণ্ডপে, শমসেরনগর ইউনিয়নে ১৪টি মণ্ডপে, কমলগঞ্জ ইউনিয়নে ৮টি মণ্ডপে, আলীনগর ইউনিয়নে ২২টি মণ্ডপে, আদমপুর ইউনিয়নে ১৩টি মণ্ডপে, মাধবপুর ইউনিয়নে ১৯টি মণ্ডপে ও ইসলামপুর ইউনিয়নে ৯টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ১৭টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপে শিল্পীরা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। কেউ প্রতিমার গায়ে দিচ্ছেন তুলির আঁচড়, আবার কেউ ব্যস্ত প্রতিমাতে মাটির শেষ প্রলেপ দিতে।

এ বছর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সবধর্মের লোকজনদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভা করা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ জানান, প্রতিটি মণ্ডপে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির ২১ দফা নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। গত বছর কমলগঞ্জ উপজেলার ১৫টি পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটায় এবার প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও ধর্মীয় নিয়ম-নীতি পালন করে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনের জন্য প্রতিটি পূজা কমিটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ির সভাপতি শংকর লাল সাহা ও সাধারণ সম্পাদক অলক দেব জানান, গত দুই বছর করোনার কারণে পূজার আয়োজন তেমন জাঁকজমক ছিল না। এ বছর পূজাকে ঘিরে উৎসবের আমেজ দেখা যাচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে জাঁকজমক প্রস্তুতি।

কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার প্রতিটি স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জন্য সার্বিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।