ওসমানীনগরে পূর্ব বিরোধের জেরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

ফাইল ছবি

সিলেটের ওসমানীনগরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এসময় হামলায় মহিলাসহ আরো ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এরমধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শনিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের বেতখাই গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত আনোয়ার হোসেন বেতখাই গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেন গংদের সাথে একই বাড়ির চাচাতো ভাই গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া ও শাহিন মিয়া গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার জিলু মিয়া তার মেয়ের কবর জিয়ারত করে প্রতিপক্ষের ঘরের সামন দিয়ে আসার সময় তাকে মারপিট করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মিমাংসা করে দেয়ার জন্য রবিবার দিন তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু মিমাংসার পূর্বেই আজ শনিবার সকাল ৮টায় জিলু মিয়া গংরা গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া, শাহিন মিয়া ও সুমন মিয়া গংরা রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেন গংদের ঘরে হামলা চালায়। এসময় অনেকেই ঘুমে ছিলেন।

হামলাকারীরা তাদের ঘর-দরজা ভাঙচুর করে নারী-পুরুষকে টেনে বাইরে বের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। তাদের হামলায় জিলু মিয়া, তার স্ত্রী হেনা বেগম, ছেলে রাসেল মিয়া, জাকির মিয়ার ছেলে মাহিদ ও নুরুল, ঝুনু মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম, শফিক মিয়ার মেয়ে হাছনা বেগম ও নাজমা বেগম আহত হয়। হামলাকারীরা আহত রাসেলের পায়ুপথ দিয়ে লোহার রডও ঢুকিয়ে দেয়। হামলার সময় আনোয়ার হোসেন গরু চরাতে বাড়ির নিকটবর্তী মাঠে ছিলেন। প্রতিপক্ষ সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।

পরে আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন মারা যান। এছাড়া আহত রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

নিহত আনোয়ার হোসেনের চাচাতো বোন তাহমিনা বেগম বলেন, ‘সুমন মিয়া, বাদশা মিয়া, গণি মিয়া, শাহিন মিয়া ও কাদির মিয়া গংরা রামদাসহ অস্ত্র নিয়ে সকাল ৮টায় আমাদের ঘরে হামলা চালায়। ঘর-দুয়ার ভাঙচুর করে আমার বাবা জিলু মিয়া, ভাই রাসেল মিয়াসহ মহিলাদের ঘর থেকে টেনে বের করে কোপাতে শুরু করে। এসময় আমার চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন বাড়ির পাশের মাঠে গরু নিয়ে গিয়েছিলেন। হামলাকারীরা সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্যাহ বদরুল বলেন, তাদের দুই পক্ষের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার ঘরের সামন দিয়ে যাওয়া নিয়ে জিলু মিয়ার ওপর হামলার ঘটনাটি মিমাংসার জন্য রবিবার ইউনিয়ন পরিষদে বিচারের দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু শনিবার সকালেই গণি মিয়া, কাদির মিয়া ও বাদশা মিয়া গংরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আনোয়ার হোসেনকে হত্যাসহ অনেক নারী-পুরুষকে আহত করে।

ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।