ওসমানীনগরে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন, অভিযান অব্যাহত

পবিত্র রমজান মাসেও ওসমানীনগরের হাট বাজারে হু হু করে বাড়ছে নিত্য পণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে তেল, চিনি, ছোলা, খেজুরসহ প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই বেড়েছে।

শুধু তাই নয়, ইফতারে ব্যবহৃত লেবু ও ইসুবগুলের ভুসির দামও বেড়েছে লাগামহীনভাবে। যে লেবুর হালি এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা তার দাম হয়েছে দ্বিগুণ। ইফতারে ডালের বড়া বা বেগুনি তৈরিতে যে বেসন ব্যবহার করা হয় তার দামও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে।

পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও শনিবার তা ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। আলু এক সপ্তাহ আগে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি ছিল, গতকাল বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজি। ৫০-৬০ টাকা কেজির বেগুন এক সপ্তাহে বেড়ে হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

এছাড়া গরুর মাংসের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৭২০ টাকা কেজি। গতকাল গোয়ালাবাজারে হাড়সহ মাংসের কেজি ৮০০ পর্যন্ত উঠেছে। হাড় ছাড়া মাংস বিক্রি হয়েছে ১০০০ টাকা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি কিনতে হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিনে ৫ টাকা বেড়েপ্রতি লিটার ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

শনিবার (১৬ মার্চ) গোয়ালাবাজার, তাজপুর বাজারে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারিতে চিনির দাম নতুন করে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। যার কারণে খুচরা বাজারে বেড়েছে পাঁচ টাকা। খুচরায় কেজি প্রতি চিনির দাম (প্যাকেটজাত) ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। গত সপ্তাহেও ছিল ১৫৫ টাকা কেজি। এছাড়া ছোলা ও কয়েক পদের ডালের দামও বাড়তি দেখা গেছে। ভালো মানের ছোলার দাম নতুন করে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। খেসারির ডাল মানভেদে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের সপ্তাহে কিছুটা কম ছিল।

রোজার বাজারে বিক্রেতাদের বেশ ব্যস্ত দেখা গেলেও ক্রেতাদের অনেকের চেহারায় ছিল চিন্তার ছাপ। রোজায় বেশি প্রয়োজন এমন অধিকাংশ পণ্য বেশ চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। রোজার মাসে এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ক্রেতাদের মতে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

এদিকে, সিলেটের ওসমানীনগরে বেশি দরে গরুর মাংস বিক্রি করায় দুই ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অপরাধে দুই ফল বিক্রেতাকে ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র গোয়ালাবাজারে এই অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট রাজিব দাশ পুরকায়স্থের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে ভাই ভাই মিট হাউজ এবং মামুন মিট হাউজ সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দরে মাংস বিক্রি করায় ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করা হয় এবং সরকার নির্ধারিত ৬৬৪ টাকা দরে বিক্রি করার নির্দেশ দেয়া হয়।

একই সময়ে অতিরিক্ত দরে ফল বিক্রির অপরাধে দুই ব্যবসায়িকে ৯ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়।

এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব দাশ পুরকায়স্থ জমিরামানা আদায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।