ওসমানীনগরে দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে চেয়ারম্যান আটক

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সাহেদ আহমদ মুসাকে নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান করেছেন দুটি পক্ষ। একটি পক্ষ তাঁর পদত্যাগ দাবি করলেও অন্য পক্ষ তাকে বহালের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক উত্তেজনা।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদের পদত্যাগের দাবিতে সাদিপুর ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল উপস্থিত হয় ইউপি কার্যালয়ের সামনে।

এসময় উভয়পক্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বাক-বিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও নেতাকর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। একপর্যায়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষ স্থান ত্যাগ করেন।

এদিকে এমন পরিস্থিতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনায়েম মিয়া, তদন্দ কর্মকর্তা আরাফাত জাহান চৌধুরী ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে ওসমানীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহানাজ পারভীন সাদীপুর ইউনিউন পরিষদের সচীব মারুতি নন্দন ধামকে বলেন, ‘বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসা আর অফিস করবেন না।’

এদিকে আজ বিকেল ৩টার দিকে গোয়ালাবাজার থেকে সিলেট গোয়েন্দা পুলিশের একটি চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসাকে আটক করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোনায়েম মিয়া।

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা চোরম্যান সাহেদ আহমদের বরখাস্তের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেছেন। একইসঙ্গে সাহেদ আহমদেকে বরখাস্ত না করার মর্মে অন্য আরেকটি আবেদন করেছেন অপর একদল শিক্ষার্থী।

প্রসঙ্গত, গেল ৪ আগস্ট বিকাল ৫টার দিকে শেরপুর গোল চত্বরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন করেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করলে বেশ কয়েকজন ছাত্র-জনতা আহত হন। শিক্ষার্থীরা দাবি, চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসার নেতৃৃত্বে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পরদিন ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসা ছুটি নিয়ে ইউপি সদস্য সামসুল ইসলাম শামিমকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলে তার পদত্যাগের দাবীতে ৪ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন মিছিল করে আসছে স্থানীয় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা।