ওসমানীনগরের ঘরে ঘরে ডায়রিয়া-জ্বর-সর্দি-কাশি!

ওসমানীনগরে ঘরে ঘরে ডায়রিয়া জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলা হাসপাতালসহ বিভন্নি হাট বাজারের ডাক্তারের চেম্বারে এসব রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসব রোগীদের মধ্যে শিশুরোগীর সংখ্যা বেশি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গরমের পর বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রার পরিবর্তন হয়েছে। যার ফলে সর্দি ও জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশু রোগীদের অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিনের তাপ প্রবাহ মাত্রারিক্ত থাকার পর হঠাৎ করে বৃষ্টির পর তাপমাত্রা পরিবর্তনের পর ঘরে ঘরে ডায়রিয়া ও জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের গ্রামের প্রতিটি ঘরে কেউ না কেউ ডায়রিয়া, জ্বর বা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত কোন রোগীর খবর না পাওয়া গেলেও রোগীদের মধ্যে ‘ডেঙ্গু’ আতংক বিরাজ করছে।

এদিকে ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর-সর্দি-কাশির রোগীর সংখ্যা বেশি দেখা গেলেও সেখানে নেই তাপমাত্রা মাপার কোন যন্ত্র। নেই শিশুদের জ্বর-সর্দির কোন ঔষধ।

চলতি আগস্ট মাসের শুরু থেকে ওসমাননীগর উপজেলার ঘরে ঘরে জ্বর, মাথাব্যথা ও পেটের পীড়ায় ভুগছে মানুষ। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে দেখা গেছে, সর্দি থাকা, গলা ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, মাংসপেশীতে ব্যাথা, কাশি, হাঁচিতে আক্রান্ত। জ্বর সর্দি-জ¦র যেন ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরের উপসর্গ দেখা দেয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই সর্দিজ্বর আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি অন্যের মধ্যে রোগ ছড়াতে পারেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ঠান্ডা যেন ছড়িয়ে না পরে সেজন্য কয়েকটি পদক্ষেপ মেনে চলা যায়। গরম পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, ঠান্ডায় আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে তোয়ালে বা গৃহস্থালির দ্রব্যাদি শেয়ার না করা। ঠান্ডা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর নিজের চোখ বা নাক স্পর্শ না করা।

চিকিৎসকরা আরও বলেন, খুব সামান্য কারণেই ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যেই মানুষের সর্দিজ্বর ভালও হয়ে যায়। এ সব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুম বা বিশ্রাম নিলে সুস্থ হওয়ার পক্ষে সহায়ক। ঘুম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ঠান্ডা বা সর্দিজ্বরের সময় বিশ্রাম নিলে বা পরিমিত ঘুম হলে এ রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়। উষ্ণ পরিবেশে থাকলেও সর্দিজ্বরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রচুর পরিমাণ তরল পানীয় তথা পানি বা ফলের রস পানের গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা অথবা লেবু এবং মধু দিয়ে হালকা গরম পানীয় তৈরি করে পান করলে গলা ব্যাথা দ্রুত উপশম হতে পারে বলে জানান।

এদিকে উপজেলার ফার্মেসীগুলোতে ওরস্যালাইন, ডায়রিয়ার এবং জ্বর-সর্দি ও কাশির ওষুধ বিক্রি বেড়েছে বলে একাধিক ফার্মেসী মালিক জানিয়েছেন। তারা জানান, গত কয়েক দিনে ডায়রিয়া ও জ্বর-সর্দি-কাশির ওষুধ বিক্রি কমপক্ষে ২ গুণ বেড়েছে।

জ¦র-সর্দির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাহারুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে এ রোগ দেখা দিয়েছে। একটু সচেতন হলেই এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আমাদের সেবা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের উপজেলা হাসপাতাল নতুন। কার্যক্রম চলছে অস্থায়ী ভবনে। এখানে সব কিছু আনা সম্ভব হচ্ছে না।