সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ শ্রমিক নয়ন মিয়া (২০) হত্যা মামলার পাঁচ আসামীকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। একই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১১ জুন) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন, সিলেট গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী খালেদ সাইফুল্লাহ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ ও হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্তকমিটি গঠনের বিষয়ে ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, যদিও বিষয়টি হাসপাতালের নয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার বিস্তারিত জানতে তদন্তকমিটি গঠন করেছে।
জানা যায়, শুক্রবার (৯ জুন) সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত নয়ন মিয়া ও আইয়ুব আলী নামের দুই শ্রমিককে চুরির অভিযোগে একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। পরে আহত অবস্থায় সকাল সোয়া ৯ টার দিকে নয়নকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে অপর শ্রমিক আইয়ুব আলীকে হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নয়ন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার আবদুল জলিলের ছেলে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নয়নের বাবা আবদুল জলিল বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়।
ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা হলেন-কুড়িগ্রামের কচাকাঁটা থানার নারায়ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল, সাবান আলী, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার তেঘরা গ্রামের রুবেল মিয়া ও বগুড়া শিবগঞ্জের আবদুর রাজ্জাক।
শনিবার তাদের সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত শুনানির পর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই জুয়েল চেীধুরী তদন্ত করছেন।
নয়নের বাবা আব্দুল জলিল জানান, প্রায় ১০/১২ দিন আগে কাজের খোঁজে নয়ন বাসা থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু ছেলের রোজগারের টাকার বদলে লাশ পেলেন তিনি। তার পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, নয়ন খুব ভালো ছেলে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কখনও এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। চুরির অপবাদে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছেন।