ওষুধের চেয়ে ডাক্তারের কথায় রোগীর আত্মবিশ্বাস বাড়ে: প্রধানমন্ত্রী

সেবার ব্রত নিয়ে চিকিৎসকদের মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‌‘ওষুধের থেকেও ডাক্তারের দুটো কথায় রোগীকে অনেক ক্ষেত্রে সুস্থ করে তোলে। তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে। সেই বিষয়টার দিকেও একটু বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু পেশা হিসেবে না, আপনারা মানবতাবোধ নিয়ে মানুষের পাশে থাকবেন।’

সোমবার (৬ জুন) রাজধানীর মহাখালীতে ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসে’ (বিসিপিএস) প্রতিষ্ঠানটির সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা মানুষের সেবা দেন। যখন একজন রোগী ডাক্তারের কাছে যায়, ওষুধের থেকেও ডাক্তারের দুটো কথায় কিন্তু মানুষকে অনেক ক্ষেত্রে সুস্থ করে তোলে বা তাদের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে। সেই বিষয়টার দিকেও একটু বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। এটা শুধু পেশা হিসেবে না, মানুষের সেবা আপনারা করেন। সেই সেবার ব্রত নিয়েই আপনারা মানুষের পাশে থাকবেন। সেটাই আমরা আশা করি। আপনারা মানবতাবোধ নিয়ে মানুষের পাশে থাকবেন; এটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানেই আপনারা সব থেকে সুখ পাবেন বলে আমি মনে করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, মানবতাবোধ নিয়ে এ দেশের মানুষকে কীভাবে আমার মতো করে সেবা করে যাবো সেটাই আমার লক্ষ্য। সেটাই মানুষকে দিয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতাটা আমার কাছে একটা সুযোগ—বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার। এখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোগবিলাসে গা ভাসিয়ে দেওয়া নয়, বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার এবং তাদের সেবার একটা সুযোগ আমি মনে করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক মানুষ এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, টাকা পয়সা হয়ে গেছে। একটু হাঁচি-কাশি হলেই তারা বিদেশে চলে যায়। একদিকে ভালো, তাতে আমাদের এখানে রোগীর চাপ একটু কম পড়ে। কিন্তু কোভিড ১৯ এর সময় তো কেউ বিদেশে যেতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখানে তাদের ভ্যাকসিন দিলাম। বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। ভ্যাকসিন আমরা নিজেদের টাকায় কিনেছি। টেস্ট কিট নিজের টাকায় কিনেছি। আমরা বিনা পয়সায় সবাইকে দিয়েছি। এই সব বিত্তশালীরা, যারা হঠাৎ টাকা-পয়সা বানিয়ে বেশ ফুলে-ফেঁপে উঠেছেন; তারা কিন্তু বিদেশে যেতে পারেননি। কারণ তখন তো সব দরজা বন্ধ।’

তিনি বলেন, ‘তখন বাংলাদেশের হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা নিতে হয়েছে বা ভ্যাকসিন নিতে হয়েছে। করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এখানে অনেকেই এই মন্তব্য করেছেন যে, “বাংলাদেশেও যে এত সুন্দর হাসপাতাল আছে এটা তো আমরা কখনও দেখিনি, জানতামই না।” করোনা আমাদের একটা শিক্ষা দিয়েছে, বিত্তশালীদের অন্ততপক্ষে দেশেও যে আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারে- এমন ডাক্তার, নার্স আছে, তা শিখিয়ে দিয়েছে। আমাদের ডাক্তাররাও যে এত দক্ষতা রাখে অন্তত এই শিক্ষাটা তারা পেয়েছেন।’